কাজী মোতাহার হোসেন; ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ যাঁকে অভিহিত করেছেন ‘আপনভোলা নিরহংকার মানুষ, বিদ্বান ও গুণী’ হিসেবে। যাঁকে নিয়ে অন্নদাশঙ্কর রায় বলেছিলেন, “একজন উদারমনা মুসলমান ও সেই সঙ্গে দেশপ্রাণ বাঙালি এবং সকলের উপর একজন সৎ মানুষ।” তাঁর সাহিত্যের মূল্যায়ণ করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন- তাঁর রয়েছে ‘স্বচ্ছ প্রাঞ্জল ভাষা’, ‘বলবার সাহস’ ও ‘চিন্তার স্বকীয়তা’। এই মানুষটিই বাংলাদেশে মুক্তচিন্তা ও প্রগতিশীলতা বিকাশের এক অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব।
কাজী মোতাহার হোসেনকে এভাবে বাঙালি, বিশেষত বাংলাদেশী বাঙালিদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেবার কারণ- যে দেশ বা দেশের মানুষকে শিক্ষিত করে তুলতে আজীবন ‘দ্য ল্যাম্পলাইটার’ হয়ে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছেন তিনি, সে দেশের মানুষের কাছে তিনি এখন ক্রমেই ‘নাম শুনেছি বলে মনে হচ্ছে’ হয়ে উঠেছেন ।
কাজী মোতাহার হোসেনের জন্ম ১৮৯৭ সালের ৩০ জুলাই, তৎকালীন নদীয়া জেলার ভালুকা (বর্তমান কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী) থানার লক্ষ্মীপুর গ্রামে, মাতুলালয়ে। পৈতৃক নিবাস রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার বাগমারা গ্রামে। মোতাহার হোসেনের পূর্বপুরুষ মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে দিল্লি-দরবারে ধর্মীয় উপদেষ্টা ও বিচারক (কাজী) পদে নিযুক্ত ছিলেন। এই সূত্রেই মোতাহার হোসেন ‘কাজী’ পদবী লাভ করেন। পিতা কাজী গওহরউদ্দীন আহমদ ও মাতা তসিরুন্নেসার আট ছেলে-মেয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন কাজী মোতাহার হোসেন। বাবা কাজী গওহরউদ্দীনের সরকারি চাকরি ছিল, তাঁর সংসারে অসচ্ছলতা ছিল নিত্য সঙ্গী। বালক মোতাহারের পড়ার খরচ পুরোপুরি বহন করা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই বৃত্তি পেতেন বলে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত লেখাপড়া করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়েছিল। কখনো কখনো বৃত্তির টাকার সংসারে খরচ করে নিজের খরচ চালানোর জন্য টিউশনি বা দীর্ঘমেয়াদী বন্ধে (গ্রীষ্ম বা পূজার বন্ধে) বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন তিনি। দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করেছেন, কিন্তু লেখাপড়া ছেড়ে দেননি।
ছেলেবেলার শিক্ষকদের মধ্যে যতীনবাবুর কথা আজীবন বলেছেন কাজী মোতাহার হোসেন। যতীনবাবু ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, উদারমনা একজন শিক্ষক। এই মানুষটির আদর্শ-শিক্ষা তাঁকে সারাজীবন অনুপ্রাণিত করেছে। এমনকি তাঁর সাহিত্যের হাতেখড়িও হয় যতীনবাবুর হাত ধরেই। কুষ্টিয়ার রথযাত্রা উপলক্ষে রচনা লেখা প্রতিযোগিতা হয়। সেবার যতীনবাবুর উৎসাহে রচনা লিখে প্রথম হলেন কাজী মোতাহার হোসেন। সেই থেকে তাঁর লেখালেখি শুরু।
ছাপার অক্ষরে তাঁর প্রথম লেখা ছাপা হয় ‘সওগাত’ পত্রিকায়। সেটা ছিল এক বিজ্ঞানবিষয়ক নিবন্ধ- ‘গ্যালিলিও’। এরপর আর থেমে থাকেননি মোতাহার হোসেন। লেখালেখির প্রথমদিকে তিনি বিদ্যাসাগরীয় ও বঙ্কিমী স্টাইলে লিখতেন; রবীন্দ্রনাথের প্রভাবও ছিল তাঁর উপর। কিন্তু পরবর্তীতে লেখালেখির জগতে তিনি তাঁর নিজস্ব স্টাইল নিয়ে আসেন, যা ছিল প্রাঞ্জল এবং সহজবোধ্য। নিজের লেখা নিয়ে তিনি বলেছেন, “আমার রচনায় যা কিছু জটিলতা তা ভাবের, ভাষার নয়।” তাঁর ভাষার এই স্পষ্টতাই তাঁর স্বকীয়তা। তার লেখা বইগুলোর মধ্যে ‘সঞ্চায়ন’ (১৯৩৭; প্রবন্ধ সংকলন), ‘নজরুল কাব্য পরিচিতি’ (১৯৫৫), ‘সেই পথ লক্ষ্য করে’ (১৯৫৮), ‘সিম্পোজিয়াম’ (১৯৬৫), ‘গণিত শাস্ত্রের ইতিহাস’ (১৯৭০), ‘আলোক বিজ্ঞান’ (১৯৭৪), ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’ (১৯৭৬), ‘প্লেটোর সিম্পোজিয়াম’ (অনুবাদ; ১৯৬৫) অন্যতম।
কাজী মোতাহার হোসেনের খুব কাছের বন্ধু ছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁদের দুজনের বন্ধুত্ব ছিল প্রগাঢ়। বিভিন্ন চিঠিতে কাজী নজরুল ইসলাম তাঁকে ‘মোতিহার’ বলে সম্বোধন করেছেন। তাঁদের সম্পর্ক এতটাই গভীর ছিল যে, মোতাহার হোসেনের দাড়ি-কাটা নিয়ে নজরুল ‘দাড়ি-বিলাপ’ নামে একটি দীর্ঘ কবিতাও লিখেছিলেন। কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাথেও মোতাহার হোসেনের বিশেষ ঘনিষ্ঠতা ছিল। এমনকি শরৎচন্দ্রের ‘মহেশ’ গল্পটিও মোতাহার হোসেনের সঙ্গে আলাপচারিতারই ফসল।
গণিতের প্রতি ছেলেবেলা থেকেই তাঁর ছিল প্রচণ্ড আগ্রহ। একদম ছোটবেলায় তাঁর ছোট চাচা কাজী আবুল হোসেন তাঁকে যোগ-বিয়োগ ও গুণের পদ্ধতি শেখান, আর ছোট্ট মোতাহার নিজে নিজেই ভাগ শিখে চাচাকে অবাক করে দেন। পদার্থবিজ্ঞান, গণিত ও পরিসংখ্যান- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি বিভাগেই অধ্যাপনা করেছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ও বিখ্যাত সংখ্যাতত্ত্ববিদ প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশের ছাত্র। তিনি তাঁর ‘নজরুল কাব্য পরিচিতি’ বইটি উৎসর্গ করেছিলেন প্রিয় শিক্ষক প্রশান্তচন্দ্রকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর সহকর্মী ছিলেন বোস-আইনস্টাইন থিওরির জনক সত্যেন্দ্রনাথ বসু। কাজী মোতাহার হোসেন তাঁর লেখা ‘তথ্য-গণিত’ বইটি সত্যেন বোসকে দেখানোর জন্য কলকাতায়ও গেছিলেন। আরো অনেকের সামনে সে বইয়ের ভূমিকা পড়ে বোস বলেছিলেন, “দেখ! তোমরা কেউ লিখতে পারতে? পারতে না। এ আমার ছেলে!” শুধু তা-ই নয়, সত্যেন বোস তাঁর জীবনের শেষ চিঠিটিও লিখেছিলেন মোতাহার হোসেনকে।
১৯৫০ সালে ‘Design of Experiments’ বিষয়ে গবেষণার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাজী মোতাহার হোসেন ডক্টরেট (পিএইচ.ডি.) ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর থিসিসের পরীক্ষকদের মধ্যে ছিলেন বিখ্যাত সংখ্যাতত্ত্ববিদ স্যার রোনাল্ড ফিশার। তিনিও তাঁর এই গবেষণাপত্রের উচ্চ প্রশংসা করেন। পরবর্তীতে মোতাহার হোসেনের উদ্ভাবিত একটি পদ্ধতি সংখ্যাতত্ত্বশাস্ত্রে (Statistics) ‘Hussain’s Chain Rule’ নামে পরিচিতি পায়।
মাতৃভাষা বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার তাগিদ সবসময়ই অনুভব করেছিলেন কাজী মোতাহার হোসেন। সে চিন্তা থেকেই রচনা করেন ‘তথ্য-গণিত’, ‘গণিতশাস্ত্রের ইতিহাস’, ‘আলোক-বিজ্ঞান’ নামের বইগুলো। বিজ্ঞানী সত্যেন বোসের বিখ্যাত ‘কোয়ান্টাম-থিওরি’ সম্পর্কিত প্রবন্ধ বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন এবং তা ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় ছাপা হয়।
১৯২৬ সালের ১৯ জানুয়ারি কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হোসেন, কাজী মোতাহার হোসেন প্রমুখের আগ্রহ ও পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকায় গড়ে ওঠে প্রগতিশীল সাহিত্য-সংগঠন ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’। মুসলিম সাহিত্য-সমাজের বার্ষিক মুখপত্র ছিল ‘শিখা’। শিখার দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষে সম্পাদক ছিলেন কাজী মোতাহার হোসেন। শিখাগোষ্ঠীর শিখারা স্বপ্ন দেখতেন বুদ্ধিবৃত্তির স্বাধীন চর্চা করার সুযোগ দেয় এমন প্রগতিশীল সমাজ কাঠামো তৈরি করার । মোতাহার হোসেনও ছিলেন সেই আদর্শে বিশ্বাসী। তিনি চোখ বন্ধ করেই অন্যের কথা শুনতে বা শুনলেও তা বিশ্বাস করতে চাইতেন না । চোখ মেলে সত্যিকারের জীবনকে অনুভব করতে চাইতেন তিনি। ধর্মান্ধতা বা কুসংস্কারের কোনো স্থান ছিল না তাঁর কাছে। কুসংস্কার আর ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন। তাঁর লেখা নিবন্ধগুলোর মধ্যে ‘অসীমের সন্ধানে’, ‘কবি ও বৈজ্ঞানিক’, ‘আনন্দ ও মুসলমান গৃহ’, ‘সঙ্গীতচর্চা ও মুসলমান’, ‘নাস্তিকের ধর্ম’, ‘মানুষ মোহাম্মদ’, ‘ভুলের মূল্য’, ‘লেখক হওয়ার পথে’ উল্লেখযোগ্য ।
প্রগতিশীলতার চর্চা করতে গেলে, প্রচলিত নষ্ট সমাজব্যবস্থার সংস্কার চাইলে ধর্মান্ধ-কুসংস্কারাচ্ছন্ন লোকেরা খড়গ হাতে নেমে পড়েছে সব যুগেই। শিখাগোষ্ঠীও এর বাইরে ছিল না। কাজী আবদুল ওদুদ বা আবুল হোসেনদের মতো নিগৃহীত বা অপমানিত না হলেও ধর্মান্ধদের রক্তচক্ষুর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে কাজী মোতাহার হোসেনকেও। তবু মোতাহার হোসেন বলে গেছেন-
আমরা ইসলামের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিতে চাই না – আমরা চাই বর্তমান মুসলমান সমাজের বদ্ধ কুসংস্কার এবং বহুকাল সঞ্চিত আবর্জনা দূর করিতে।
কাজী মোতাহার হোসেন ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন, ধর্মান্ধ ছিলেন না। ১৯৬৬ সালে সস্ত্রীক হজ্জব্রতও পালন করেন তিনি। মোতাহার হোসেন যা বিশ্বাস করতেন, মোতাহার হোসেন যে স্বপ্ন দেখতেন- কোনো ভণ্ডামি না করেই তিনি তা বলতে পারতেন। ব্যক্তিজীবনে এভাবে সততা এবং সরলতার চর্চা করার মানুষ এ সমাজে বিরল।
সদ্য স্বাধীন হওয়া পাকিস্তানে যখন রাষ্ট্রভাষা চাপিয়ে দেয়ার, ভাষা-সংস্কার, হরফ-পরিবর্তনের (বাংলা ভাষাকে উর্দু হরফে লেখার) চক্রান্ত চলছিল, ধর্মকে পুঁজি করে অযৌক্তিক রবীন্দ্রবিরোধিতা তুঙ্গে উঠেছিল, তখন সোচ্চার হয়ে উঠেছিলেন কাজী মোতাহার হোসেন। তিনি এটাও বলেছিলেন যে, উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হলে তা থেকে সৃষ্ট অসন্তোষে পূর্ব-পশ্চিমের সম্বন্ধের অবসান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরবর্তীতে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীই সত্য হয়।
নানা রকম প্রতিকূলতার মধ্যেও রবীন্দ্র-জন্মশতবার্ষিকী পালনে তিনি এগিয়ে আসেন। বাংলা নববর্ষকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণার দাবি জানান। ঢাকায় প্রথমবারের মতো তাঁর সভাপতিত্বে বিখ্যাত লেখক ম্যাক্সিম গোর্কির মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি-বিজ্ঞানচর্চার উপর যখনই আঘাত এসেছে তখনই প্রতিবাদ করেছেন কাজী মোতাহার হোসেন।
একজন আপাদমস্তক সঙ্গীতানুরাগী মানুষ ছিলেন কাজী মোতাহার হোসেন। কবি নজরুলের সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠতার একটা বড় কারণ ছিল দুজনেরই সঙ্গীতের প্রতি অনুরাগ। কুষ্টিয়ায় স্কুলে পড়ার সময় থেকে তাঁর সঙ্গীতচর্চা শুরু হয়। পরে ১৯১৭-১৮ সালে তিনি বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ হাকিম মোহাম্মদ হোসেনের কাছে দু’বছর টপ্পা, ঠুমরি ও খেয়াল শেখেন। পরে এঁর কাছেই বছর তিনেক সেতারের তালিমও নিয়েছিলেন। সন্তান-সন্ততিদেরও সঙ্গীত-শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন মোতাহার হোসেন। তাঁর মেয়ে সনজীদা খাতুন ছিলেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী এবং ‘ছায়ানট’ সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
কাজী মোতাহার হোসেন আরো যে কারণে বিখ্যাত ছিলেন সেটি হলো দাবা। খেলাধুলার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল অনেক, আর যদি সেটা দাবা হয় তবে তো কথাই নেই। তাঁর দাবাখেলার সঙ্গী ছিলেন কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কাজী নজরুল ইসলাম, সতীশচন্দ্র আড্ডী (সর্বভারতীয় চ্যাম্পিয়ন), কিষাণলালের মতো বিখ্যাত লোকেরা। ১৯২৫ সালে তিনি ‘অল ইণ্ডিয়া চেজ ব্রিলিয়ান্সি’ প্রতিযোগিতায় প্রথম হন। গ্র্যাণ্ডমাস্টার কাজী মোতাহার হোসেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং আজীবন সভাপতি ছিলেন। ফুটবল, টেনিস, হাই জাম্প, সাঁতার এবং ব্যাডমিন্টনেও তাঁর পারদর্শিতা ছিল। ১৯৫১ সালে ঢাকায় লন টেনিস প্রতিযোগিতায় তিনি চ্যাম্পিয়ন হন।
জনপ্রিয় গোয়েন্দা-সিরিজ ‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ভক্ত অথচ কাজী আনোয়ার হোসেনকে চেনেন না এমন তো হতে পারে না। কাজী আনোয়ার হোসেন এই মানুষটিরই সুযোগ্য সন্তান। থ্রিলার লিখতে আনোয়ার হোসেনকে উৎসাহিত করেছেন বাবা মোতাহার হোসেন।
বার্ধক্যে এসে তাঁর সবচেয়ে বড় সঙ্গী হয়ে ওঠে দাবার বোর্ড। কানে কিছুটা কম শুনতে পেতেন বলে মানুষের সাথে খুব একটা কথা বলার, গল্প বা আড্ডার সুযোগ হতো না তাঁর। তাই যেখানেই দাবাড়ু পেতেন দাবার বোর্ড সাজিয়ে বসে পড়তেন। এই মহান ঋষিতুল্য মানুষটি ১৯৮১ সালের ৯ অক্টোবর মারা যান, দিনটা ছিল ঈদের দিন। একজন প্রগতিশীল শিক্ষাবিদ বা সাহিত্যিক, গণিতবিদ-বিজ্ঞানী, দাবাড়ু বা সঙ্গীতানুরাগী- এই সবগুলো পরিচয়ের হাত ধরেই তিনি বাংলাদেশের মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি, প্রগতিশীলতা, মুক্তচিন্তার অন্যতম অভিভাবক হয়ে উঠেছিলেন। তাঁদের তৈরি করা ভিতের উপরই দাঁড়িয়ে আছে আজকের বাংলাদেশ।
Discussion about this post