পহেলাকে একদিন আকাশ দেখিয়ে বলেছিলাম— মেঘ হবে?
বৈশাখের প্রথম গুঞ্জরিত মেঘের মতো
মেয়েটি সেদিন চোখে প্রশান্তির মেঘ এনে
আমাকে কথা দিয়েছিলো— ‘হবে’
আমি পহেলার সূক্ষ্ম ক’টি আঙুল খোঁজেছি—
সে স্পন্দিত আঙুলে ছুঁয়ে দিলো আচ্ছন্ন শরীর,
কাঁপা ঠোঁটে প্রেম এঁকে বাড়ালো আয়ুর নদী!
—যেনো ভেঙে গেলো অতীতের দারুণ খোলস।
কানের ফাঁকে চুল গুজিয়ে দিতে দিতে পহেলাকে বলেছিলাম, ‘কখনো বৃষ্টি হয়ে ঝরে যাবে না তো?’
আজও পহেলার মতো কেউ এলো না আমার এ গোপন চত্বরে।
শ্রাবণের মেঘ উড়ে যেতে দেখলে দিগন্ত পেরিয়ে—
হৃদয়ের কোমল কৌটোয় জমানো অসুখ
এখনো নড়াচড়া দিয়ে উঠে রোজ।
মূর্তির মতো অপলক আকাশ দেখি;
দেখি না কেবল পহেলা, দেখি না- সেই মেঘ।
যার ফোঁটা ফোঁটা জলে ঝরে যাবে নিরাসক্ত ব্যথা,
গুঞ্জন করে উঠবে পেরেশানি মন।
কখনো আকাশে বেজে উঠলে ঢোল
হাতের কাজ ফেলে দোঁড়ে আসি বাইরে।
—হয়তো আবছা মেঘে এক্ষুণি দেখা দেবে পহেলা।
দেখতে দেখতে হঠাৎ থমকে গেলো প্রকৃতি;
প্রচন্ড শব্দে কেঁপে কেঁপে উঠলো চারপাশ।
আতঙ্কিত পশুরা মাঠ ছেড়ে এসে ঢুকলো ছালাঘরে।
রোদে দেওয়া শুকনাপাতাগুলো বৃষ্টির জল থেকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন পাশের ঘরের মিতালীর মা।
বাতাসে কোথাও এলিয়ে পড়লো কদমের ডাল।
মা একবার ডাক দিলেন আমাকে দেখে—
‘ বাইরে দাঁড়ায় আছিস কিসের জন্যে?
ঠাডাল পড়বেনে আবার; আয়া পর বাজান।’
আমি ভারসাম্যহীন মানুষের মতো
একা দাঁড়িয়ে রইলাম আকাশে চোখ রেখে।
যাযাবর মেঘ থেকে কেঁপে কেঁপে এসে একফোঁটা স্বচ্চজল ছুঁয়ে দিলো আমার মুখ।
জলটুকু আঙুলে নিতেই ভেসে উঠলো
পহেলার একজোড়া চকলেট কালারের ঠোঁট।
Discussion about this post