ক্রীড়া ডেস্ক
বাইশ গজের ক্রিকেটকে অনেকেই বলেন রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা। এখানে ব্যক্তিগত অর্জনের সঙ্গে আছে দলগত সাফল্য। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডিতে দলগত ও ব্যক্তিগত, অনেক প্রাপ্তি মিটেছে টাইগারদের। ওলটপালট হয়েছে রেকর্ড বই। নাজমুল হোসেন শান্ত ব্যক্তিগত ১৬৩ রানে আউট হওয়ার আগে অনেক অর্জনের সাক্ষী হয়ে গেছেন।
ব্যক্তিগত সাফল্যের শুরুটা করেছিলেন শান্ত নিজেই। ৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার হলেও এতোদিন কোনো শতক ছিল না নিজের নামের পাশে। সে আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডি টেস্টে। সাবলীল আর ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে টেস্টের প্রথম দিনেই শতক তুলে নেন। পরে সেটিকে দেড়শতে পরিণত করেন তিনি। লাহিরু কুমারার বলে আউট হয়ে ফিরেছেন ১৬৩ রান করে।
ব্যক্তিগত অর্জনে সাফল্য মিলিয়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। এতে যতটা তৃপ্ত, ততটাই স্বস্তি মুমিনুলের। তবে অধিনায়ক হিসেবে নন, ব্যাটসম্যান মুমিনুল ভারি করেছেন নিজের অর্জনের খাতা। সাড়ে ৮ বছরের ক্যারিয়ারে ব্যাট হাতে দেশেই রাজত্ব আর ছড়ি ঘুরিয়েছেন তিনি। তবে দেশের বাইরে পা দিলে তিন অঙ্ক ছোঁয়া হচ্ছিল না তার।
এবার ছিল চ্যালেঞ্জ, ছিল নিজেকে প্রমাণের মঞ্চ। সেখানে সফলই বলতে হবে মুমিনুলকে। টেস্ট তো বটেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন তিনি। শেষ কয়েকবছর এনিয়ে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে। এবার আক্ষেপ ঘোচালেন মুমিনুল।
দলগত অর্জনেও এসেছে সাফল্য। ২০০৯ সালের পরে আর বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় উইকেটে ছিল না কোনো শতরানের জুটি। অবশেষে তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত নতুন করে এই রেকর্ড স্পর্শ করেন। তামিম ৯০ রানে আউট হলে থামে শান্তর সঙ্গে তার ১৪৪ রানের পার্টনারশিপ।
রেকর্ড বইতে নিজের অবস্থান শক্ত করেছেন শান্ত, এবার সঙ্গে নিয়েছেন মুমিনুলকে। তৃতীয় উইকেটে দুজন গড়েন ২৪২ রানের পার্টনারশিপ। যা দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটির মর্যাদা পেয়েছে। আগের রেকর্ডটির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন মুমিনুল, ২০১৮ চট্টগ্রামে এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই মুশফিকের সঙ্গে গড়েছিলেন ২৩৬ রানের জুটি।
শান্ত আর মুমিনুল যেভাবে ব্যাট করছিলেন তাতে এক সময় মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের পক্ষে যেকোনো উইকেটের সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপও ভেঙে দেবেন তারা। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি ৩৫৯ রানের, নিউনিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব ও মুশফিকের।
বলের হিসাবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি
| বল | ব্যাটার | প্রতিপক্ষ | ভেন্যু | সাল |
| ৫১৮ | আশরাফুল-মুশফিক | শ্রীলঙ্কা | গল | ২০১৩ |
| ৫১৪ | মুমিনুল-শান্ত | শ্রীলঙ্কা | পাল্লেকেলে | ২০২১ |
| ৪৯৮ | জাভেদ-নাফিস ইকবাল | জিম্বাবুয়ে | ঢাকা | ২০০৫ |
| ৪৯৪ | মুশফিক-সাকিব | নিউজিল্যান্ড | ওয়েলিংটন | ২০১৭ |
খুব কাছে গিয়েও পার্টনারশিপে সর্বোচ্চ বল খেলার রেকর্ডটি ভাঙতে পারেননি শান্ত-মুমিনুল। দুজন মিলে বল খেলেছেন ৫১৪টি। এতে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠতে পেরেছেন তারা। ৪ বল বেশি নিয়ে এখনো চূড়ায় থাকলেন মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিম। ২০১৩ সালে গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫১৮ বল মোকাবিলা করেছিলেন দুজন।
এদিন শান্ত-মুশফিকের সামনে সুযোগ ছিল আরও। টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপে সবার ওপরে নাম মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিমের। গলে ২৬৭ রানের জুটি গড়েছিলে দুজন। ২৪২ রানের পার্টনারশিপ গড়ে সে রেকর্ড না ভাঙতে পারলেও তৃতীয় উইকেট জুটির রেকর্ড ঠিকই নিজেদের দখলে নিয়েছেন শান্ত-মুমিনুল।















Discussion about this post