শিক্ষার আলো ডেস্ক
বেতনবৈষম্য নিরসনসহ তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের টানা তিনদিন কর্মবিরতির পর কর্মবিরতির চতুর্থ দিনে এসে কর্মসূচির ডাক দেওয়া প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি-দাওয়া পূরণে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দেওয়ায় কর্মবিরতি স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। বৈঠক শেষে প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া পূরণে কী আলোচনা হলো, তা জানান শিক্ষক নেতারা।
প্রাথমিকের শিক্ষক নেতারা জানান, বৈঠকে তিন দফা দাবি নিয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি দাবি সরকারের পক্ষ থেকে একরকম মেনে নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির এ দুটি দাবি বাস্তবায়ন হবে বলে শিক্ষকদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
তারা জানান, সহকারী শিক্ষকদের তিন দফার মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল ‘প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি’। এ দাবিটি নিয়ে সরকার ইতিবাচক। উপদেষ্টা ও অতিরিক্ত সচিব এবং অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ‘শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি’র বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি
শিক্ষকদের আরেকটি দাবি ছিল ‘১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন’। এটি নিয়ে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা। শিক্ষকদের নেতাদের ভাষ্য, ‘১০ বছর এবং ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন কার্যক্রম চলমান এবং দ্রুত নিষ্পত্তি হতে যাচ্ছে।’
তবে শিক্ষকদের প্রধান দাবি চাকরির শুরুতে (এন্ট্রি পদে) সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দেওয়ার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা। সহকারী শিক্ষক এন্ট্রিপদে ১১তম গ্রেডের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে এবং শীঘ্রই শিক্ষক নেতৃবৃন্দকে সমন্বয় করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষক নেতারা জানান, কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থান তুলে ধরে চলমান কর্মসূচির বিষয়ে নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কর্মবিরতির মতো কর্মসূচিকে নিরুৎসাহিত করেছেন এবং শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যেতে অনুরোধ জানিয়েছেন। চলমান কার্যক্রম সুষ্ঠু বাস্তবায়নের প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষের প্রতি সহযোগী মনোভাব রেখে চলমান কর্মসূচি ২৫ জুন পর্যন্ত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন সহকারী শিক্ষক সংগঠন এক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখিত সময়ে দাবি বাস্তবায়ন না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দিয়ে দাবি আদায় নিশ্চিত করা হবে। সে পর্যন্ত সব সহকর্মীকে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানানো হলো।
দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত। তিনটি দাবিদাওয়া নিয়ে সহকারী শিক্ষকরা গত চার দিন ধরে পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে ছিলেন।
সহকারী শিক্ষকেরা ১৩তম গ্রেডে ও প্রধান শিক্ষকেরা ১১তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। গত ২৪ এপ্রিল প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
Discussion about this post