নিউজ ডেস্ক
নির্বাচিত হওয়ার সাড়ে তিন মাস পর ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস গত শনিবার(১৬মে) ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছেন। বিদায়ী মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার তাপসের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই করোনাসহ পাঁচটি বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা দক্ষিণকে সাজানোর পরিকল্পনা করেছেন ব্যারিস্টার তাপস। প্রথমে করোনা দ্বিতীয় হলো ডেঙ্গু। পাশাপাশি তার নির্বাচনী ইশতেহারগুলো বাস্তবায়ন করবেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মেয়র পদে নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি ঢাকা-১০ আসনের এমপির পদ থেকে পদত্যাগ করে ডিএসসিসির মেয়র নির্বাচনে অংশ নেন। গত ২৯ জানুয়ারি যখন মেয়র প্রার্থী হিসেবে তিনি নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন, তখন বাংলাদেশে করোনার কোনো খবর ছিল না। ফলে ইশতেহারে করোনা প্রসঙ্গ ছিল না। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে করোনাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এ ক্ষেত্রে কিছু পরিকল্পনাও করেছেন তিনি। অসহায় দরিদ্র মানুষের সহযোগিতার পাশাপাশি করোনার সংক্রমণ যাতে কমে, সে ব্যাপারে তার নিজস্ব কিছু দিকনির্দেশনা আসতে পারে। কাউন্সিলরদের এ ক্ষেত্রে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি এডিস মশা নিয়ন্ত্রণেও কাউন্সিলরদের মাঠে থাকার নির্দেশ আসতে পারে। বিভিন্ন কমিটি করে কাউন্সিলরদের সেসব কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে তাদের বেশি মাত্রায় সক্রিয় রাখার কৌশল নিয়েছেন তিনি।
এ ছাড়া ঢাকার ঐতিহ্য রক্ষায় তার বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনগুলো রক্ষা করে সেগুলো পর্যটনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ঢাকায় বাঙালির যেসব ঐতিহ্য ছিল, সেগুলোকে আরও জাগ্রত করার পরিকল্পনা রয়েছে। একটি মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে এগুলো বাস্তবায়ন করতে চান তিনি।
ঢাকা শহরের একটি বড় সম্পদ বুড়িগঙ্গা নদী। এ নদীকে সাজাতে চান নতুন মেয়র। নদীর পাড় হয়ে উঠবে ঢাকাবাসীর চিত্তবিনোদনের প্রধান কেন্দ্র। পাশাপাশি দখল-দূষণে জর্জরিত বুড়িগঙ্গাকেও তিনি নতুন করে প্রাণ দিতে চান।
অবৈধ খাল দখলমুক্ত করে রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসন করতে চান তিনি। জলাধার রক্ষণের পাশাপাশি যাতে ড্রেনেজ সিস্টেম আধুনিকায়ন করা যায়, সেদিকেও তার নজর থাকবে। নদী ও খালের ক্ষেত্রে থাকবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।
রাজধানীর একটি বড় সমস্যা যানজট। এ কারণেই অনেকে ঢাকাকে মৃত নগরীর সঙ্গে তুলনা করেন। এখানেই তিনি গতি ফেরাতে চান।
ঢাকার একটি পুরোনো ঐতিহ্য সম্প্রীতি। একসময় পঞ্চায়েত প্রথার মাধ্যমে সামাজিক অনেক সমস্যার সমাধান হতো। সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে মাদক, জুয়া, কিশোর অপরাধও বেড়ে গেছে। পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কার্যকর করে সম্প্রীতির বন্ধন আবার তৈরি করতে চান ব্যারিস্টার তাপস।
সিটি করপোরেশনের সেবা ও কার্যক্রম নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ বরাবরই আছে। দুর্নীতি রোধকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে চান নতুন মেয়র। বছরের ৩৬৫ দিনে সার্বক্ষণিক নগরবাসীকে সেবা দিতে চান। এ জন্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় সেবা কার্যক্রমও সহজ করা হবে। গৃহকর বাড়ানো হবে না বলে তিনি আগেই জানিয়েছেন।
এ ছাড়া বস্তিবাসীর উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসুবিধা বৃদ্ধি, আধুনিক খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্র, পাঠাগার, ব্যায়ামাগার, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ডে কেয়ার গড়ে তোলা, সমন্বিত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা, নগরবাসীর ভোগান্তি লাঘবে কাজ করে যাবেন মেয়র তাপস।
Discussion about this post