শিক্ষার আলো ডেস্ক
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত ভাস্কর্য ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভেঙে ফেলা হচ্ছে এমন ছবি নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে অনেকে মন্তব্য ও প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়, মূলত ভাঙা নয়, পুকুর পারের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য করা মূল নকশা অনুযায়ী সংস্কার কাজ হচ্ছে।
গত ১৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উপাচার্যের কার্যালয়ের দিকে মুখ করে বানানো এই ভাস্কর্যটি ভাঙতে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ ভবন এবং পুরাতন কলা অনুষদ ভবনের মাঝামাঝি পুকুরে। ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছিলেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।ভাস্কর্যটি প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিচালক, নৃত্য প্রশিক্ষক ও অভিনেত্রী মুনমুন আহমেদের হাতের ছবি থেকে তৈরি করেছিলেন ভাস্কর্যবিদ মনিন্দ্র পাল। একজন নারী দুহাত সংযুক্ত করে অঞ্জলি দিচ্ছেন— এই ভাবনা বহন করত ভাস্কর্যটি।
এর পরই ভাস্কর্যটি ভাঙার পক্ষে-বিপক্ষে তৈরি হয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধনও করেছে মঙ্গলবার।
নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদ তার হাতের ছবি থেকে নির্মিত এই ভাস্কর্য ভাঙা প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে গত মঙ্গলবার (১৭ই জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এরপরই এই বিষয়টি আলোচনায় আসে।
তিনি ইংরেজিতে লিখেছেন, ” ক্যান এনিওয়ান স্টপ দেম প্লিজ? অর্থাৎ কেউ কি তাদের থামাতে পারেন?”
এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার ভাস্কর্যটি ভাঙার খবর ছড়িয়ে পড়লে উপাচার্য, সকল ডিন ও প্রশাসনের সবার সমন্বয়ে জুমে অনলাইনে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এই বৈঠকে পুরোপুরি ভেঙ্গে না ফেলে যতটুকু ভাঙা হয়েছে ততটুকু পর্যন্তই কাজ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে আগামী ২২শে জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস এবং ২৯শে জুন ক্লাস শুরু হবে। ২২শে জুন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। যে বৈঠকে এ বিষয়ে সব কিছু পর্যালোচনা করা হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান জানান, পুকুরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে যে নকশা করা হয়েছিলো সেই কাজ সম্পূর্ণ করা হচ্ছে। এটি নির্মাণ শেষ হলেই প্রকৃত সৌন্দর্যটা দেখা যাবে। ছবি দেখে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়েছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে জানান, ভাস্কর্যটির মূল যে ডিজাইন ছিল, সেই ডিজাইনেই এখন তা ফিরবে। ভাস্কর্যটি যেভাবে তৈরি করার কথা ছিল, আগের প্রশাসন তা করেনি। বর্তমানে সেটি সংষ্কারের কাজে হাত দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভুল মেসেজ ছড়ানো হচ্ছে। ভাস্কর্যটি সংস্কার করছি যেন জলাধারটির সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পায়।
Discussion about this post