শিক্ষার আলো ডেস্ক
উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে জড়ানো শিক্ষার্থীদের স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (২১ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. জুলফিকুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ এখন থেকে ক্লাসে অংশ নিতে পারবেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে ‘সাসপেন্ডেড এক্সপালশন’ বা ‘স্থগিত বহিষ্কারাদেশ’ বহাল থাকবে। এর মানে হলো, তারা বর্তমান স্প্রিং ২০২৫ সেমিস্টার থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন, তবে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।
অন্যদিকে, কিছু শিক্ষার্থীকে দুই সেমিস্টারের জন্য (স্প্রিং ২০২৫ এবং সামার ২০২৫) বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা আগামী ফল সেমিস্টার থেকে পুনরায় ক্লাসে ফিরতে পারবেন। এক্ষেত্রেও তাদের বিরুদ্ধে সাসপেন্ডেড এক্সপালশন বহাল থাকবে, অর্থাৎ ভবিষ্যতে আচরণবিধি ভঙ্গ করলে তাদের স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা খুব শিগগিরই তাদের নিজ নিজ ই-মেইলে ডিসিপ্লিনারি কমিটির এ সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত নোটিশ পেয়ে যাবেন। শৃঙ্খলা কমিটির সভায় শিক্ষার্থীদের আবেদন পুনর্বিবেচনার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর নতুনবাজারে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যার দিকে রাস্তা থেকে সরে যান তারা।
এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজ রাত ৮টার মধ্যে সবার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে আলটিমেটাম দেন। তারা ঘোষণা দেন, এ দাবি মেনে নেয়া না হলে রোববার (২২ জুন) সকাল ১০টা থেকে আবারও নতুনবাজার ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো-
১) ইউআইইউ কর্তৃক অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত বহিষ্কার প্রত্যাহার ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
২) বহিষ্কারের সঙ্গে জড়িত সব ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৩) ইউআইইউ-তে দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়ম-অসুবিধা ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে রিফর্ম দাবিসমূহ বাস্তবায়ন।
৪) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি স্বাধীন সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
৫) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ কর বাতিল করতে হবে।
ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের যৌক্তিক ১৩ দফা দাবি দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষা করে আসছে। উল্টো আন্দোলন দমন করতে বহিষ্কার করা হচ্ছে। গত ২ জুন ৪১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। তাদের মধ্যে ২৪ জনকে স্থায়ী ও ১৬ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
Discussion about this post