শিক্ষার আলো ডেস্ক
রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিজে দগ্ধ হয়েও শিক্ষার্থীদের বাঁচানোর চেষ্টা করা শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরী (৪৬) মারা গেছেন। সোমবার রাতে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের উদ্ধারের পর নিজেই ঠিকমতো বের হতে পারেননি ওই শিক্ষিকা। ঘটনাস্থলে তাঁর শরীরের একটি অংশ দগ্ধ হয়। পরে তাঁকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সোমবার রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্য হয়।
এর আগে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার মুহূর্তে দ্রুত শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম থেকে বের করে আনেন ওই শিক্ষিকা। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের বের করে দিয়ে নিজেই যথাসময়ে বের হতে পারেননি। শরীরের বেশিরভাগ অংশ দগ্ধ হয় তাঁর। প্রিয় ছাত্রছাত্রীদের বারবার বলছিলেন, ”ভয় পেওনা দৌঁড়াও আমি তো আছি” !
উদ্ধার হওয়া মাইলস্টোনের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, সেনাবাহিনী বলেছে, এই শিক্ষিকার জন্য অন্তত ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী বেঁচে গেছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে তাঁর স্বামী মনছুর হেলাল বলেন, ‘বাচ্চারা যেদিক দিয়ে বের হবে, ওখানে সরাসরি এসে বিমানটি ক্রাশ করছে, তারপরে এক্সপ্লোশন হয়ে ভেতরে ঢুকে গেছে। ঘটনার পর মাহরিন কিছু বাচ্চাকে বের করে নিয়ে আসে।’
আইসিউতে মাহরীনের শেষ কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইসিইউতে আমি তাকে বললাম, তুমি কেন এ কাজ করতে গেলা? সে বলল, আমার বাচ্চারা আমার সামনে সব পুড়ে মারা যাচ্ছে, আমি এটা কীভাবে সহ্য করি। ও (মাহরীন) সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে, কিছু বাচ্চা বের করছে, আরও কিছু বাচ্চা বের করার চেষ্টায় ছিল। ঠিক এমন সময় বিকট শব্দে আরেকটি বিস্ফোরণ হয়। আর তাতেই তার পুরো শরীর পুড়ে যায়।’
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাইলটসহ ৩১ জন নিহত হয়েছে। এতে দগ্ধ হয়েছে আরও ১৬৪ জন।
Discussion about this post