শিক্ষার আলো ডেস্ক
এসএসসি ও এইচএসসির খাতা শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া এবং সেই খাতার ছবি ফেসবুক-টিকটকে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনার অভিযোগে আট পরীক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
বোর্ড সূত্র জানায়, রোববার (২০ জুলাই) অভিযুক্ত শিক্ষকদের কাছে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার সোমবার (২১ জুলাই) সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ওই পরীক্ষকরা যেসব খাতা মূল্যায়নের জন্য পেয়েছিলেন, সেগুলোর বৃত্তভরাট শিক্ষার্থীদের দিয়ে করিয়েছেন এবং তার ছবি ফেইসবুক ও টিকটকে ছড়িয়ে পড়ে। যাচাই-বাছাই করে অভিযুক্ত পরীক্ষকদের শনাক্ত করে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব পেলে তাদের শাস্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
খাতার বৃত্ত শিক্ষার্থীদের দিয়ে পূরণ ও ন্য বোর্ড ও পাবলিক পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজ থেকে বিরত রাখা, এমনকি তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত করার মত শাস্তি হতে পারে। তারা দুই বছর সে ছবি ছড়িয়ে পড়ায় তাদের আজীবনের জন্য পাবলিক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন থেকে বাদ দেওয়া, তাদের আজীবনের জপর্যন্ত জেল বা জরিমানা অথবা জেল ও জরিমানা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
যাদেরকে শোকজ করা হয়েছে, তারা হলেন- নরসিংদীর বারৈচা কলেজের শিক্ষক ও এইচএসসির বাংলা প্রথম পত্র বিষয়ের পরীক্ষক মধুছন্দা লিপি, সাভারের হাজী ইউনুছ আলী কলেজের শিক্ষক ও এইচএসসির বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ের পরীক্ষক জাকির হোসাইন, গাজীপুরের ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার আনসার ভিডিপি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ও এইচএসসির বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ের পরীক্ষক রাকিবুল হাসান, ডেমরার রোকেয়া আহসান কলেজের শিক্ষক ও এইচএসসির ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র বিষয়ের পরীক্ষক মুরছানা আক্তার। নবাবগঞ্জের মুন্সীনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও এসএসসির গণিত বিষয়ের পরীক্ষক আবু বকর সিদ্দিক, রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এসএসসির গণিত বিষয়ের পরীক্ষক সমীরময় মন্ডল, যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ও এসএসসির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষক সাখাওয়াত হোসাইন আকন এবং সেন্ট যোসেফস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ও এসএসসির উচ্চতর গণিত বিষয়ের পরীক্ষক মহসীন আলামীন।
বোর্ড বলছে, এ শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দিয়ে খাতার বৃত্ত ভরাট করিয়েছেন ও তার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে, ক্ষুণ্ন হয়েছে বোর্ডের ভাবমূর্তি।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার কারণ ব্যাখ্যা করে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এসএসসিতে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীরা গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বোর্ডে বিক্ষোভ করতে এসে অভিযোগ করেন, তারা এসএসসির খাতা ‘টিকটকে দেখতে পেয়েছেন।
এ অভিযোগ আমলে নিয়ে শনিবার সব পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষককে সতর্ক করে চিঠি পাঠায় ঢাকা বোর্ড।
এতে বলা হয়, উত্তরপত্র পরীক্ষক বা প্রধান পরীক্ষক ছাড়া অন্য কোনো শিক্ষার্থী বা পরিবারে অন্য কোনো সদস্যকে দিয়ে বৃত্ত ভরাট করা বা মূল্যায়ন করা পরীক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত ১৯৮০ সালের আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকের দুই বছর পর্যন্ত জেল বা জরিমানা অথবা জেল ও জরিমানা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
এর আগে গত ৫ মে একই ধরনের সতর্ক বার্তা দিয়েছিল ঢাকা বোর্ড।
Discussion about this post