শিক্ষার আলো ডেস্ক
দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষা ও ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল) নামে শিক্ষকদের নতুন একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করা হয়েছে। আজ শনিবার (২৬ জুলাই) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংকের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, সিনিয়র অধ্যাপক, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ, শহীদ পরিবারের সদস্য এবং জুলাই বিপ্লবে আহতরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউটিএল’র মূল প্রতিপাদ্য হলো- ‘জ্ঞান, বিশ্বাস, আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতা’। রাজনৈতিক আনুগত্যের সংস্কৃতি থেকে মুক্ত হয়ে শিক্ষা, গবেষণা, আত্মমর্যাদা, চিন্তার স্বাধীনতা ও জাতীয় দায়িত্ববোধকে এগিয়ে নেওয়াই হবে এই সংগঠনটির অন্যতম উদ্দেশ্য বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাসকে আহবায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইনকে সদস্য সচিব করে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এ সময় অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা বাংলাদেশের জাতীয় চেতনায় এক নতুন জাগরণ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক ও আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গিকে এই বিপ্লব পুনর্নির্মাণ করছে।
তিনি বলেন, এ প্রেক্ষাপটে প্রয়োজন হয়ে পড়েছে একটি পেশাদার শিক্ষক সংগঠনের; যা শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষা, একাডেমিক সততা, নিরাপদ ক্যাম্পাস ও শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ও গবেষণায় উৎকর্ষতা সাধন এবং গঠনমূলক সম্পৃক্ততা ও নীতিনির্ধারণের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম। ইউটিএল এ প্রয়োজন থেকেই জন্ম নেওয়া শিক্ষকগণের একটি জাতীয় প্ল্যাটফর্ম। এর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো রাজনৈতিক আনুগত্যের সংস্কৃতি থেকে মুক্ত হয়ে শিক্ষা, গবেষণা, আত্মমর্যাদা, চিন্তার স্বাধীনতা ও জাতীয় দায়িত্ববোধকে এগিয়ে নেওয়া।
শিক্ষকদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলা হয়, ইউটিএল কেবল একটি প্ল্যাটফর্ম নয়—এটি একটি আন্দোলন বটে। যে সকল শিক্ষক বিশ্বাস করেন যে, শিক্ষকগণ জাতির উচ্চতর আকাঙ্ক্ষা পূরণে পথপ্রদর্শক; আর শিক্ষা সমাজকে ন্যায়, জ্ঞান ও নৈতিকতার পথে নিয়ে যেতে পারে—ইউটিএল তাদেরই প্ল্যাটফর্ম।
সংগঠনটি আরো জানায়, এটির মিশন হবে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণকে নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষক সংগঠন গড়ে তোলা; শিক্ষকগণের একাডেমিক, পেশাগত স্বার্থ রক্ষা ও উন্নয়ন; শিক্ষা ও জাতীয় নীতিনির্ধারণে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখা; একাডেমিয়াকে মুক্ত, নৈতিক ও গঠনমূলক জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা; সর্বপরি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবান্ধব ও নিরাপদ ক্যাম্পাস তৈরিতে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখা।
লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেয়া হয়। এই সময় শহীদ পরিবারের সদস্যগণ এবং উপস্থিত পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ মতামত পেশ করেন। পরিশেষে নবগঠিত কমিটির আহবায়ক উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
Discussion about this post