শিক্ষার আলো ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এর পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ভিসি ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম শমসের আলী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
গত শনিবার (২ আগস্ট) রাত সাড়ে ৩টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, প্রোভিসি অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন। তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
এ ছাড়া মরহুম ড. এম শমসের আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান।
ইউট্যাবের নেতারা বলেন, মহান আল্লাহর কাছে মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। একইসঙ্গে তার শোকাহত পরিবার, গুণগ্রাহী, স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। মহান আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিন যেন মরহুম শমসের আলীকে বেহেশত নসিব করেন, এই দোয়া করি।
এ ছাড়া শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার। নেতারা মহান আল্লাহর দরবারে মরহুম ড. এম শমসের আলীর রুহের মাগফিরাত এবং জান্নাত কামনা করেন।
১৯৩৭ সালের ২১ নভেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্ম নেওয়া এই বিজ্ঞানী রাজশাহী কলেজ থেকে কলেজ জীবন শেষ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার পছন্দের বিষয় ছিল পদার্থবিজ্ঞান। এরপর তিনি পি.এইচ.ডি করতে চলে যান ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকেই থিওরেটিক্যাল নিউক্লিয়ার ফিজিক্স বিষয়ে পি. এইচ. ডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৬১ সালে পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু হয়। পি.এইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করার পর ১৯৬৫ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি ঢাকায় আণবিক শক্তি কেন্দ্রে সিনিয়র সায়িন্টিফিক অফিসার হিসেবে যোগ দেন। কর্মদক্ষতার জন্য তিনি ১৯৭০ সালে অত্যন্ত অল্প বয়সে আণবিক শক্তি কমিশনের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬১-১৯৮২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছর যাবৎ ড. আলী আণবিক শক্তি কমিশনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা স্পেশাল সাইটেশনের মাধ্যমে ড. আলীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি প্রফেসর অব ফিজিক্স করে তাকে একটা বিরল সম্মাননা প্রদান করে। ১৯৮২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন।
১৯৯২-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সাল হতে ২০১০ সাল সময় পর্যন্ত সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
এছাড়াও তিনি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সংস্থার সদস্য ছিলেন এবং একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন।
Discussion about this post