শিক্ষার আলো ডেস্ক
আজ ১৫ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সপরিবারে নিহত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নিজ বাসভবনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। কিছু বিপথগামী সেনাসদস্যের বুলেটের আঘাতে প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেল এবং দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল। সেদিন বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত এবং তার ছেলে আরিফ ও সুকান্তবাবু, মেয়ে বেবি, বঙ্গবন্ধুর ভাগনে শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলকে হত্যা করা হয়। এ সময় বিদেশে অবস্থান করায় বেঁচে যান দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ উন্মুক্ত করেন।
বিচার শুরু হয় ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই মর্মান্তিত ঘটনার ৩৫ বছরেরও বেশি সময় পর ২০১০ সালে অভিযুক্তদের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর পূর্ব পাকিস্তানে ছাত্রলীগ গঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনায় আসেন তিনি। এরপর বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন ও ছেষট্টির ছয় দফা প্রণয়নে ভূমিকা রেখে এবং ১৯৬৮ সালে তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান আসামি হিসেবে শেখ মুজিব বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হয়ে ওঠেন।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামকে বিজয়ে রূপান্তর করেন তিনি। তবে স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে নানা চ্যালেঞ্জ, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র এবং অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার মধ্যে তাকে একাধিক সংকট মোকাবিলা করতে হয়।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরাতে ১৯৭৫ সালের শুরুতে তিনি একদলীয় শাসনব্যবস্থা ‘বাকশাল’ চালু করেন, যা বিরোধী রাজনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনা ও অসন্তোষের জন্ম দেয়। এ পরিস্থিতিই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের তৎপরতা বাড়িয়ে তোলে।
Discussion about this post