শিক্ষার আলো ডেস্ক
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর সভাকে ঘিরে আজ রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঘিরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ১৮তম নিবন্ধনের চাকরিপ্রার্থীরা। গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ফলাফলে বৈষম্যের অভিযোগে প্রতিবাদ ও সনদ প্রদানের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। এরপর গত ২১ সেপ্টেম্বর শিক্ষা সচিব রেহানা পারভীনের আশ্বাসে অনশন কর্মসূচি ভাঙ্গেন ফল প্রত্যাশী প্রার্থীরা।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীন আজকের সভাতে কি সমাধান দেন সে প্রত্যাশায় আছেন ১৮তম নিবন্ধনের চাকরিপ্রার্থীরা।
১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চূড়ান্ত ফল থেকে বাদ পড়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি প্রার্থী। শূন্য পদ থাকার পরও বিপুলসংখ্যক প্রার্থীকে ফেল করানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ফেল করা পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের দাবি, বিষয়ভিত্তিক বিপুল সংখ্যক পদ ফাঁকা থাকলেও নিয়োগে যথাযথভাবে উত্তীর্ণ না করানো নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।এ বিষয়ে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)-এর শূন্যপদ বিশ্লেষণেও বিষয়ভিত্তিক ফেল করানোর প্রমাণ মিলেছে।
তাদের অভিযোগ, “আমরা মেধাবী ও পরিশ্রমী হয়েও অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ফেল করানো হয়েছে। এই বৈষম্যমূলক ফলাফল অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে। তা না হলে হাজারো তরুণ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে এবং এনটিআরসিএর ওপর শিক্ষার্থীদের আস্থা নষ্ট হবে।”
“ই-সনদে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর উল্লেখ করা হয়নি, যা ফলাফলের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। পূর্ববর্তী নিবন্ধন পরীক্ষাগুলোতে (১ম থেকে ১২তম) মৌখিক পরীক্ষা ছিল না। ১৩তম থেকে ১৭তম পরীক্ষায় মৌখিক নম্বর যুক্ত হলেও তা মেধাতালিকায় প্রভাব ফেলেনি। অথচ এবার তা সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া হয়েছে। একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন বোর্ডে ফলাফলের চরম বৈষম্যও দেখা গেছে—কোথাও প্রায় সবাই পাস করেছেন, আবার কোথাও প্রায় সবাই ফেল করেছেন”।
আরও পড়ুনঃ এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষা উপদেষ্টার দপ্তরের সামনে অনশনে শিক্ষক-কর্মচারীরা
তাদের পাঁচ দফা দাবি সংক্ষেপে হলো:
- ৪০ শতাংশ নম্বর পেলে ভাইভা পরীক্ষায় পাস—বিধিমালায় এমনই বলা আছে। তাই যাঁরা এই শর্ত পূরণ করেছেন, তাঁদের সবাইকে ই-সনদ দিতে হবে।
- লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতেই যেহেতু সনদ প্রদান হয় এবং ভাইভায় অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ বা তার বেশি পেয়েছেন, তাই সবাইকে উত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
- ভিন্ন প্রশ্ন কাঠামো ও মানবণ্টন অনুসরণ করে এনটিআরসিএ যেভাবে বিকল্প প্রশ্ন ছাড়াই পরীক্ষা নিয়েছে, সেটি অনৈতিক ও বিভ্রান্তিকর। এই অবস্থায় লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ফেল করানো অন্যায্য।
- ভাইভা সনদে ১২ নম্বর থাকা সত্ত্বেও অনেকে চূড়ান্ত ফলাফলে ফেল, এটি অসংগতি—তাঁদের মানবিক বিবেচনায় হলেও উত্তীর্ণ করতে হবে।
- ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এসব প্রার্থীদেরও লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতে মেধাতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।
এবারের নিবন্ধনে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল “বিকল্প প্রশ্নবিহীন ও পূর্ব ঘোষণাবিরোধী মানবণ্টন”। পরীক্ষার্থীদের অনেকেই এই পরীক্ষার প্রশ্নের ধরণ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন, যা তাঁদের প্রস্তুতিকে বিফল করেছে বলে দাবি।তাঁদের মতে, ভুল প্রশ্ন কাঠামো এবং অসমঞ্জস মূল্যায়নের দায় প্রার্থীদের উপর চাপিয়ে দেওয়া অনৈতিক ও অন্যায্য।
Discussion about this post