শিক্ষার আলো ডেস্ক
ভাষাসৈনিক, প্রখ্যাত কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক এর প্রতি সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগামীকাল শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে রাখা হবে।
সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সাধারণ মানুষও তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে একটি শোকর্যালির মাধ্যমে তাঁর মরদেহ ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে হস্তান্তর করা হবে। জীবদ্দশায় তিনি নিজের দেহ মরণোত্তর দান করার অঙ্গীকার করেছিলেন। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও গবেষণার জন্য তার মরদেহ দান করা হবে—এভাবেই তিনি মৃত্যুর পরও বিজ্ঞানের কাজে নিজেকে উৎসর্গ করলেন।
বার্ধক্যজনিত জটিলতায় বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত ১০টা ১২ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্রনিক কিডনি ফেইলিওর, আলঝেইমার’স ডিজিজ, পার্কিনসন’স ডিজিজ, ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালান্স, শয্যা-ক্ষত ও ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিলেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহমদ রফিক ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার শাহবাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন ক্যাম্পাসের ছাত্রদের সঙ্গে মিলে আন্দোলনে গড়ে তোলেন। ১৯৫৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের একমাত্র ছাত্র হিসেবে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।
১৯৫৮ সালে তার প্রথম বই প্রকাশিত হয়। তার রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি, সমাজ ভাবনা ইত্যাদি বহুমাত্রিক বিষয়ে ব্যাপৃত ছিল তাঁর লেখনী।
২০০৬ সালে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর আহমদ রফিক নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরের একটি ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করতেন।
২০১৯ সাল থেকে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেতে থাকে। ২০২১ সালে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যাওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। ২০২৩ সাল নাগাদ প্রায় দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন তিনি।
আহমদ রফিক সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদানের জন্য একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ও রবীন্দ্র সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেন।
Discussion about this post