শিক্ষার আলো ডেস্ক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে পানিতে ডুবে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
পানিতে ডুবে মারা যাওয়া শিক্ষার্থী হলেন সায়মা হোসেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাসা কুষ্টিয়ায়। তিনি গত ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মন্নুজান হল সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
জানা যায়, সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য অনুশীলন করছিলেন সায়মা। দুই রাউন্ড সাঁতরানোর পর হঠাৎ পানিতে ডুবে যান তিনি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে (রামেক) পাঠানো হয়। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা।
তারা অভিযোগ করেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়—বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শারীরিক শিক্ষা বিভাগ ও মেডিকেল সেন্টারের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই সায়মার মৃত্যু হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী তৌফিক রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটার সময় ওই আপু ডুবে যান। কয়েক মিনিট ধরে পানির নিচে ছিলেন। কিন্তু কেউ উদ্ধার করতে পারেননি। প্রশাসন এমন প্রশিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে যারা নিজেরাও সাঁতার জানেন না—এটা দুঃখজনক। উপস্থিত অনেকেই তাকিয়ে দেখেছিল। আমি জিমের সামনের মাঠে ছিলাম। খবর পেয়ে দৌড়ে গিয়ে নিচে নেমে তাকে তুলি। কিন্তু তখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে গেছে। রাবির মেডিক্যাল সেন্টারে অক্সিজেন ছিল না। এমন অব্যবস্থাপনা মেনে নেওয়া যায় না। পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন

এরপর রাত ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তারা প্রশাসনের উদাসীনতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ ধরনের অবহেলার বিচার না হলে শিক্ষার্থীদের জীবন আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।
রাকসুর সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, একজন শিক্ষার্থী সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে—তাহলে তার ফিটনেস টেস্ট করা হয়নি কেন? শারীরিক শিক্ষা বিভাগ কীভাবে একজন শ্বাসকষ্টের রোগীকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে অনুমতি দিল? সুইমিংপুলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা কোথায় ছিলেন, যখন একজন শিক্ষার্থী আধা ঘণ্টা ধরে পানিতে নিস্তেজ অবস্থায় ছিলেন? এসব প্রশ্নের উত্তর প্রশাসনকেই দিতে হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, আমরা ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সেখানে ফরিদ সাহবকে (উপ-উপাচার্য) রাখা হয়েছে যাতে কোনো গড়িমসি না হয়। তারা ৭২ ঘন্টার মধ্যে একটা প্রাথমিক রিপোর্ট দিবেন। সেটা দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।















Discussion about this post