শিক্ষার আলো ডেস্ক
এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটেনি। অভিযোগ তোলা শিক্ষার্থী হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়ার ওপর পরিবারের পক্ষ থেকে ডাক্তার হওয়ার জন্য অতিরিক্ত চাপ থাকায় তিনি পর্যবেক্ষক কর্তৃক ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলার গল্প বানিয়েছেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তে এমন তথ্য পাওয়ার দাবি করেছে।
গতকাল সোমবার (সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া তদন্ত প্রতিবেদন উত্থাপন করেন।
তদন্ত কমিটি জানায়, অভিযোগকারী হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়া ও তার বাবা-মায়ের প্রদত্ত সাক্ষ্য বিবরণী পর্যালোচনায় স্পষ্ট হয় যে, শুরু থেকেই তার ওপর পরিবার ও সমাজের ডাক্তার হওয়ার প্রত্যাশার চাপ ছিল। এমনকি এর আগের বছরও এই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় পাস করেননি। এ বছরও পাস করেননি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া বলেন, সব সাক্ষ্য পর্যালোচনা ও প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তদন্ত কমিটি নিশ্চিত হয় যে, অভিযোগকারীর সব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও (টেস্ট স্কোর ২৭.২৫) বাবাকে মায়ের পরামর্শে মিথ্যা বলেন তিনি।
ছোঁয়া নামের ওই শিক্ষার্থী দাবি করেছেন তিনি এইবারে ৭৫টি প্রশ্নের উত্তর করেছেন। তবে আমরা তার ওএমআর শিট দেখেছি। সেখানে তিনি ৫৭টি প্রশ্নের উত্তর করেছেন। যার অধিকাংশই ভুল উত্তর ছিল। ভর্তি পরীক্ষায় তিনি ৯ নম্বর পেয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ হুমায়রার ও এমআর শিট ছিঁড়ে ফেলার দাবী ভিত্তিহীন, বললেন পরিদর্শক ডা. নাফিসা
তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আরও ভালো রেজাল্ট/স্কোর করে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির মিথ্যা প্রত্যয় ব্যক্ত করেন হুমাইরা। কিন্তু বাস্তবে পরীক্ষায় ৫৭টি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যাবে না নিশ্চিত জেনে তার ব্যর্থতার দায় হল পরিদর্শকের উপর চাপিয়ে দেন। একই সঙ্গে ভর্তির সুযোগ লাভের আশায় এই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক গল্প সাজান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মহোদয়ের সঠিক দিকনির্দেশনায় বিগত বছরসমূহের ধারাবাহিকতায় সবার আন্তরিকতা একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর পরীক্ষা পদ্ধতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াসে তৃতীয় কোনো পক্ষের ক্রীড়ানকে পরিণত হয়েছেন কি না- তার স্বরূপ উন্মোচনের সুপারিশ করা হয়েছে।
পরিবারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাবা-মায়ের উচিত তাদের সন্তানদের এ ধরনের প্রেশার না দেওয়া।
বিশেজ্ঞদের মতে মেয়েটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং সে মনের মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাস করে বসে আছে, সে যা ভাবছে তাই সত্য। এটি একটি মেডিকেল কন্ডিশন এবং তার সঠিক কাউন্সেলিং প্রয়োজন। এর পেছনে মেয়েটির দোষ নেই, সম্পূর্ণ দোষ তার পারিপার্শ্বিকতার, তাকে যারা চাপ দিয়েছে মেডিকেলে চান্স পেতেই হবে, তাদের।
Discussion about this post