মেহরাব মাসুক
অনেক জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে একাদশ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম শুরু হলো। করোনার আক্রমণে বিধ্বস্ত শিক্ষাজীবনে এসএসসি উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভীষণ স্বস্তির খবর এটি।
তবে গতবারের মত আবারও নানা জটিলতার আশংকায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবক । ২০২০ সালে চট্টগ্রাম বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯০০৮ জন। এ বছর প্রাপ্ত জিপিএ-৫ গত বছরের চেয়েও বেশী।
বরাবরের মত নগরীর সরকারী কলেজগুলোতে মাত্র ২২০০ আসনে গোল্ডেন জিপিএ-৫ প্রাপ্তরাই কেবল সুযোগ পাবে। ফলে এবারও হাজারো মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীকে ভর্তি হতে হবে প্রাইভেট কলেজসমূহে। এক্ষেত্রে সচেতন অভিভাবকবৃন্দের প্রথম পছন্দ হতে পারে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকায় প্রতিষ্ঠিত বাংলা ভার্সন ও ইংরেজী ভার্সনে ( ন্যাশনাল কারিকুলাম)পরিচালিত চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত কলেজ অব সায়েন্স, বিজনেস এন্ড হিউমিনিটিজ(CSBH) (EIIN -১৩৪৭৮০)। কেননা এই করোনাসংকটেও ডিজিটাল এই কলেজটি অনলাইনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে ও পরীক্ষা নিয়ে নগরীতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
তাই সম্মানিত অভিভাবক ও প্রিয় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে দিতে চাই এই কলেজের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহ।

অভিজ্ঞ শিক্ষক :
CSBH এ রয়েছেন দুই স্তর বিশিষ্ট শিক্ষকমন্ডলী। ১ম স্তরে স্ব স্ব বিষয়ে সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী নবীন শিক্ষক-শিক্ষিকাগণকে নির্বাচিত করা হয়েছে কঠোর যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে।এছাড়াও স্টুডেন্ট সাইকোলজীতে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে প্রত্যেক শিক্ষককে। দ্বিতীয় স্তরে রয়েছেন খ্যাতিমান কলেজের স্বনামধন্য শিক্ষকবৃন্দ যেমনঃ অধ্যাপক মোঃ সিরাজউদ্দৌলা( অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, সরকারী হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ), অধ্যাপক মোঃ শহীদুল্লাহ (প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, প্রাণীবিদ্যা বিভাগ, চট্টগ্রাম সরকারী কলেজ), প্রফেসর দীপক দাশ (প্রাক্তন অধ্যাপক,গণিত বিভাগ, সরকারী হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ,চট্টগ্রাম),প্রফেসর মো. মুজাহিদ হোসেন (প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, চট্টগ্রাম সরকারী কমার্স কলেজ) যাঁদের পাঠদান শিক্ষার্থীদের জ্ঞানস্তরকে নিয়ে যাবে অনন্য উচ্চতায়। অধ্যক্ষ রূপে রয়েছেন চট্টগ্রাম সরকারী কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সুবির দাশ ।
আধুনিক পাঠদান পদ্ধতি :
আমাদের শিক্ষাপদ্ধতি সুশৃংখল, বিজ্ঞানসম্মত ও প্রযুক্তিনির্ভর।প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যসমূহকে জ্ঞান, অনুধাবন , প্রয়োগ ও বিশ্লেষণ অনুক্রমে বিন্যস্ত করেছি আমরা।গতানুগতিক লেকচার এর পরিবর্তে প্রতিটি শিক্ষক পাঠ্য বিষয়ের উপর বাংলা ও ইংরেজী ভার্সনে তৈরি করেন সমৃদ্ধ লেকচারশীট ও এম সি কিউ প্র্যাকটিস শীট। ডিজিটাল কনটেন্ট এর মাধ্যমে বিষয় উপস্থাপন, পর্যালোচনা, এসাইনমেন্ট,কুইজ প্রতিযোগিতা ও প্রজেক্ট এনালাইসিসের মাধ্যমে পাঠকে করা হয় সহজবোধ্য যাতে শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্ন সহজে সমাধান করতে পারে।ওভারহেড প্রজেক্টর ও মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে লেকচারশীট ভেসে ওঠে পর্দায়। একই সময়ে হোয়াইট বোর্ডে শিক্ষক তা বুঝিয়ে দেন ডায়াগ্রাম এর মাধ্যমে। ৩০ জনের প্রতিটি ক্লাসে প্রত্যেক ছাত্রের নিবিড় যত্ন নেন শিক্ষকগণ। লেকচারশীট ও এম সি কিউ প্র্যাকটিস শীট সলভ করার পর অধ্যায় ভিত্তিক হ্যান্ডনোট পায় শিক্ষার্থীরা। ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয় সহজে অনুধাবন করার জন্য সকল শিক্ষার্থীকে তাদের ট্যাব-এ পাঠ্য সংশ্লিষ্ট অ্যানিমেশন, ভিডিও ক্লিপস, প্রেজেন্টেশন স্লাইড ইত্যাদি দেয়া হয় যাতে ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যতবার খুশি ক্লাস লেকচারটি পুনরায় দেখতে পারে। এভাবে ডিজিটাল ক্লাসগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ্যবিষয়কে প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় করে তোলে, শিক্ষার্থীরা হয়ে ওঠে অধিকতর মনোযোগী। এর পাশাপাশি নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা, পাক্ষিক,সাময়িক ও বার্ষিক পরীক্ষা ইত্যাদি অবিরাম নিরীক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদক্ষতা মূল্যায়ন করা হয় এবং সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দের কাছে পৌঁছে দেয়া হয় মাসিক মূল্যায়ন পত্র। প্রতিদিন সন্তানের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির খবরও এস, এম, এস এলার্টের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয় তাঁকে।এ ছাড়া স্বল্পমেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে এক্সট্রা কেয়ার ক্লাস। ফলে প্রাইভেট কোচিং এ পড়তে হয় না।।

সমৃদ্ধ ল্যাব :
অত্যন্ত আধুনিক ও সমৃদ্ধ প্র্যাকটিক্যাল ল্যাব এই কলেজের অনন্য বৈশিষ্ট্য। পদার্থ, রসায়ন,জীব,গণিত এবং আইসিটির পৃথক ৫টি ল্যাব রয়েছে এখানে। প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে স্বতন্ত্র ইনস্ট্রুমেন্ট সেট। ইন্টারনেট সংযোগ সহ ২৫টি কম্পিউটার এবং ৬টি ল্যাপটপ দিয়ে সুসজ্জিত কম্পিউটার ল্যাব ডিজিটাল শিক্ষাঙ্গনের দাবী শতভাগ পূরণ করেছে।
করোনাকালে অনলাইন শিক্ষাসেবা :
এই কলেজটি ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবন চলমান রাখতে করোনাকালের সূচনালগ্ন থেকে অনলাইনে উচ্চমাধ্যমিক শাখার নিয়মিত শ্রেণি পাঠদান, শ্রেণি পরীক্ষা ও মূল্যায়ন কার্যক্রম অনলাইন প্রযুক্তির মাধ্যমে চালিয়ে আসছে।
অন্যদিকে আমরা বন্দরনগরীর অন্যতম ডিজিটাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস পরিচালনা করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে।তাই আমরা শুরুতেই পরিকল্পনা করি আমাদের ছাত্রছাত্রীরা যেন কোনক্রমেই পিছিয়ে না পড়ে! তাই CSBH -এ বিজ্ঞান,বাণিজ্য ও মানবিক সকল শাখার শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট রুটিন অনুসারে ক্লাস করছে ১৮ মার্চ থেকে। প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষার্থী প্রতিদিন ৪টি করে ক্লাস করেছে। ফলে যথাসময়ে প্রথম বর্ষের সিলেবাস শেষ হয়েছে এবং ২০ এপ্রিল তারিখে আমরা প্রথম বর্ষ সমাপণি পরীক্ষাও নিয়েছি। ১৪ মে প্রকাশিত ফলাফলে এই পরীক্ষায় ২৯১ জন অংশগ্রহণ করে ২৫৪ জন উত্তীর্ণ হয়।ঈদের বন্ধের পরে ৩ জুন থেকে পুনরায় ২য় বর্ষের পাঠদান শুরু হয়েছে। আশা করছি সঠিক সময়েই আমরা সিলেবাস শেষ করে নির্বাচনী( টেস্ট)পরীক্ষা নিতে পারব।

অনলাইন ক্লাস ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছেন জুম ক্লাস কনভেনর প্রভাষক আহসান হানিফ এবং হোয়াটস এ্যাপ ক্লাস কনভেনর প্রভাষক মৈত্রী ঘোষ। আমাদের লেখাপড়া এক সপ্তাহও ব্যাঘাত হয়নি কারণ ডিজিটাল কলেজ হিসেবে এখানে অনলাইনের অবকাঠামো আগে থেকেই তৈরি ছিল। তাই যথাযথ পরিকল্পনা করে ঘোষণা দেয়ার সাথে সাথেই অনলাইনে শিক্ষাদান শুরু করতে সক্ষম হয়েছি। এ ক্ষেত্রে আমরা শুরুতে হোয়াটস এ্যাপে ও পরে জুম এ্যাপে ক্লাস শুরু করি।এতে ছাত্রছাত্রীরা ভীষণ উৎসাহ নিয়ে ক্লাস করে এবং নিয়মিত ক্লাসটেস্টেও অংশ নেয়।সুনির্দিষ্ট এসাইনমেন্ট এবং এমসিকিউ ও সৃজনশীল ভিত্তিক প্রশ্নের মাধ্যমে নেয়া হয় বিশেষ মূল্যায়ন পরীক্ষা ।
শিক্ষার্থী হাসিন আনোয়ারের পরীক্ষার অভিজ্ঞতা জানা যাক তার মুখে – `অনলাইনে একাডেমিক পরীক্ষা দেয়ার অনুভূতি সত্যিই রোমাঞ্চকর! করোনাসংকটে আমরা অনেকেই চট্টগ্রাম শহর এলাকায় ছিলামনা। আমাদের অনেক বন্ধু রাজশাহী, নোয়াখালী, বান্দরবান, ক্ক্সবাজার জেলা থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। নেটের সংযোগজনিত যে কোন সমস্যায় কলেজ কর্তৃপক্ষের বিশেষ হেল্পলাইন আমাদের সহযোগিতা করেছে। পরীক্ষকগণ সারাক্ষণ এমনভাবে মনিটর করেছেন যেন আমরা সবাই একই পরীক্ষার হলে রয়েছি।পরীক্ষার শেষে অংশগ্রহণ তালিকায় ২৯১ জন পরীক্ষার্থীর নাম ছিল সত্যিই চমকপ্রদ!’
সহশিক্ষা :
শুধুই কি লেখাপড়া! এর পাশাপাশি নিয়মিত সাংস্কৃতিক চর্চা,বিতর্ক প্রতিযোগিতা,ইনডোর গেমস,বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও শিক্ষা সফর শিক্ষার্থীদের মননকে বিকশিত করছে। জাতীয় দিবস সমূহ এখানে উদযাপিত হয় সাড়ম্বরে।

ক্লাসের চারদেয়ালের বাইরে আরও কিছু দেয়ার প্রচেষ্টা রয়েছে আমাদের।আমরা আন্তর্জাতিক মানের ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ সেন্টার পরিচালনা করি বিধায় ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে SPOKEN & WRITTEN ENGLISH CLUB যেখানে শিক্ষার্থীরা READING,WRITING, LISTENING AND SPEAKING দক্ষতা উন্নয়নের সাথে সাথে প্রায় ৩৫০০ SAT ভোকাবিউলারী সম্পন্ন করে ।এই জ্ঞান তাদেরকে এইচ.এস. সি পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নে বিশেষ সহায়তা করে। ফলে CSBH এর চৌকষ শিক্ষার্থীরা আজ দেশ ও বিদেশের মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মেরিন একাডেমী,সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীতে সদর্পে ঠাঁই করে নিয়েছে।
অনলাইন আবেদন :
০৯ আগষ্ট থেকে একাদশে ভর্তির অনলাইন আবেদন শুরু হয়েছে ।আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য CSBH এর ক্যাম্পাসে রয়েছে বিনামূল্যে আবেদন ফরম পূরণের ব্যবস্থা । করোনাসংকটের কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবার আমাদের ভর্তি কার্যক্রম হবে সম্পূর্ণ অনলাইনে। ক্যাম্পাসে না এসে কলেজ ওয়েব সাইটে (www.csbh.edu.bd) লগইন করে এডমিশন ফরমে ক্লিক করলে যে ফরমটি আসবে তা পূরণ করলে এবং নির্দিষ্ট বিকাশ নম্বরে ভর্তি ফির টাকা জমা দিলেই ভর্তি সম্পন্ন হবে। শিক্ষার্থী পাবে একটি আইডি নম্বর এবং STUDENT PORTAL -এ সংরক্ষিত থাকবে তার সব তথ্য।
বিশেষ বৃত্তি :
ভর্তিতে বিশেষ বৃত্তি ঘোষণা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। জিপিএ -৫ প্রাপ্ত প্রথম ২০ জনকে মোট টিউশন ফি এর ১০০%, ২য় ২০ জনকে ৫০%, জিপিএ -৪.৫ প্রাপ্ত ১ম ২০ জনকে ২৫% এবং ২য় ২০ জনকে ১২.৫% বৃত্তি দেয়া হবে।
২২, পাঁচলাইশ( চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সন্নিকটে) চট্টগ্রাম,এই ঠিকানায় এবং ০১৯৭৬-৭৭৭৬৭৭-৯ ফোন নম্বরে যোগাযোগ এবং www.csbh.edu.bd সাইটে লগ ইন করে বিস্তারিত জানা যাবে।..
লেখক : কলেজ প্রতিষ্ঠাতা ও গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান মেহরাব মাসুক, এমবিএ (আইবিএ)
Discussion about this post