বিশ্বের শতাধিক দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে গেছে। সেই কাতারে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের নাম।
করোনা ভাইরাসের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকলেও এতদিন বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কোনো খবর ছিল না।
শুক্রবার (২০ মার্চ) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে নতুন করে তিন জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, দেশে এখন পর্যন্ত মোট ২০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। একজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে আরও তিন জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন মহিলা (৩০), পুরুষ (৩০) ও বয়স্ক পুরুষ (৭০)। বয়স্ক ব্যক্তির অবস্থা ক্রিটিক্যাল। তিনি আইসিইউতে আছেন। বাকি একজন পুরুষ ইতালি ভ্রমণ করে ফিরেছেন। আক্রান্ত বয়স্ক ব্যক্তি ও নারী বিদেশ ফেরত ব্যক্তির সংস্পর্শে ছিলেন।
তবে করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। হিসাব করে তারা দেখাচ্ছেন, এ ভাইরাসে মৃত্যুহার গড়ে মাত্র ৬ ভাগ। প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৯৪ জনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।
আমাদের দেশে যেহেতু এ ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে, সেহেতু আমাদের জেনে রাখা দরকার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কী লক্ষণ প্রকাশ পাবে।
ব্যতিক্রমী কোনো লক্ষণ নেই এ রোগের। সাধারণ ঠাণ্ডা জ্বরের মতোই মনে হতে পারে।
সাধারণত জ্বর, কাশি ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাই এ রোগের প্রধান লক্ষণ। তবে অসুখ আরও বাড়লে কিডনি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, জ্বর দিয়ে ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়, এরপরে শুকনো কাশি দেখা দিতে পারে। প্রায় এক সপ্তাহ পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। অনেক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়।
প্রতি চারজনের মধ্যে অন্তত একজনের অবস্থা মারাত্মক পর্যায়ে যায় বলে মনে করা হয়।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে হালকা ঠাণ্ডা লাগা থেকে শুরু করে মৃত্যুর সব উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত লোকের লক্ষণ দেখেই বোঝা যায় তা কতটা মারাত্মক অবস্থায় গেছে। তবে এ ভাইরাস সার্সের মতো অতোটা মারাত্মক নয়।
করোনা ভাইরাস: কখন পরবেন মাস্ক
করোনা ভাইরাস রোগের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের পর বিশ্বজুড়ে মুখে মাস্ক পরার পরিমাণ বেড়েছে। একটি দেশ বা অঞ্চলে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে সেখানে মানুষকে মাস্ক পরতে হবে কি-না।
মাস্ক পরে এ রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে নিরাপদ থাকা যাবে কি-না, এনিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
চীনের আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ে অধিবাসীদের ভিড় বা জন সমাবেশের স্থানে মাস্ক পরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বিপরীত পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা বলেন, ‘যারা সুস্থ, মাস্ক তাদের ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে পারবে না। উল্টো বারবার মাস্ক পরা ও খোলার ফলে সেটি ভাইরাসের আধার হিসেবে কাজ করতে পারে। এতে ভাইরাল জীবাণু মাস্কে আটকে আপনি নিজেকে নিজে সংক্রমিত করতে পারেন। মানুষ যা মনে করে, মাস্ক আসলে সে কাজ করে না।’
মাস্ক যাদের পরা উচিত: ‘যারা প্রকৃতপক্ষেই অসুস্থ, তাদের মাস্ক পরা উচিত। এতে তাদের মুখ বা নাক থেকে ভাইরাস বা জীবাণু ছড়ানোর পরিমাণ কমবে। আক্রান্তদের চিকিৎসা দিচ্ছেন, এমন স্বাস্থ্যকর্মীদের মাস্ক পরা দরকার। আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত মাস্ক কিনলে, যে ডাক্তার ও নার্সরা সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন, তাদের জন্য মাস্কের সরবরাহ কমে যেতে পারে।’
Discussion about this post