করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রশ্নে এতদিন নীরব থাকলেও এখন কারখানা বন্ধের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে মালিকদের পরামর্শ দিয়েছেন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক।
ভাইরাস সংক্রমণ এড়ানোর জন্য সবাইকে ঘরে থাকতে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা অনুসরণে যতদিন সরকারি ছুটি থাকবে, ততদিন কারখানা বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফেইসবুকে সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক বার্তায় নিজের এই অবস্থান জানান গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠনের সভাপতি রুবানা।
তিনি বলেছেন, এই পরামর্শের পরও কেউ কারখানা চালু রাখতে চাইলে শ্রমিকদের পূর্ণ স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা দিতে হবে। এছাড়া চিকিৎসকদের সুরক্ষা পোশাক তৈরিতে বিজিএমইএর চলমান উদ্যোগে যুক্ত হতে চাইলে তারাও কারখানা খোলা রাখতে পারবেন।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীর উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় কারখানা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিল বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।
এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রুবানা হক বলেছেন, মালিকদের সংগঠন হিসাবে বিজিএমইএ কারখানা বন্ধের নির্দেশনা দিতে পারে না। এটা মালিকদের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ব্যাপার। অথবা সরকার চাইলেও কারাখানা বন্ধের নির্দেশ দিতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার সাতটি কারখানা বন্ধের খবর দিয়েছিলেন বিজিএমইএর পরিচালক আসিফ ইব্রাহীম। তবে এসব কারখানা করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ হয়নি বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি।
“যেই কারাখানাগুলো বন্ধ হয়েছে সেগুলো করোনাভাইরাসের কারণে নয়। চারটি কারখানা বন্ধ হয়েছে অভ্যন্তরীণ গোলোযোগের কারণে। আর একটি কম্পাউন্ডের মধ্যে ছিল তিনটি কারখানা। সেখানে একজন লোক হৃদরোগে মারা যাওয়ার পর অন্যদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেই আতঙ্ক থেকে কারাখানাগুলো বন্ধ করা হয়েছিল,” বলেন রুবানা।
বাংলাদেশে চার হাজারেরও বেশি পোশাক কারখানায় কাজ করছে ৪২ লাখেরও বেশি শ্রমিক। দেশের প্রধান এই রপ্তানি খাত থেকে বছরে ৩০ বিলিয়নের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। সে কারণে পোশাক খাতকে সব সময় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গুরুত্ব দেয় সরকার।
বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের কারণে সঙ্কটে পড়া রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের শ্রমিকদের বেতন বাবদ পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনার ঘোষণা দেন।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী সব সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, জনগণকে বলা হয়েছে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করে এই ‘প্রতিরোধ যুদ্ধে’ অংশ নিতে।
পোশাক কারখানাগুলোকেও সরকারি ছুটি অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছে বিজিএমইএ।
রুবানা হক বলেছেন, “মহান স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবস উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের সবাইকে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সবার সুরক্ষার এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য কিছু সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুসরণ করে সর্ববৃহৎ শিল্প হিসেবে আমাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত। এমতাবস্থায় কারখানা বন্ধ দেওয়া বিবেচনা করবেন বলে আশা করি।
Discussion about this post