করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছু যখন বন্ধ, তখন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন সবচেয়ে বিপদে। রাজশাহী মহানগরের নারী রিকশাচালক সুমিও তার ব্যতিক্রম নন।
সারা দিন রিকশা চালিয়েও সুমি জমার ২০০ টাকা তুলতে পারেননি- এই খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর তার জন্য তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ নতুন রিকশার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
তথ্যমন্ত্রী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের কাছে ফোন করে সুমির জন্য প্রয়োজনীয় যা লাগে করার জন্য বলেছেন। সোমবার দুপুরে ডাবলু সরকার সুমির হাতে একটি নতুন অটোরিকশার চাবি তুলে দেন। আর এই সংকটকালীন সময়ে যাতে রিকশা চালাতে না হয়, এ জন্য তাকে নগদ ৫ হাজার টাকাও দিয়েছেন।
নতুন রিকশা পেয়ে সুমি বলেন, আমাকে আর অন্যের রিকশা চালাতে হবে না। ভাড়া না পেলে জমার টাকার জন্য কাঁদতে হবে না। আমার রাজশাহীতে আসার ১৫ বছরের জীবনে আজ একটা ইতিহাস হয়ে গেল।
রবিবার এই সংকটজনক মুহূর্তে সুমির দুরবস্থার কথা জানিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এরপর অনেকেই সুমির সাহায্যে এগিয়ে আসেন।
রাজশাহী নগরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মতিউর রহমান সকালেই সুমিকে খুঁজে বের করে তাকে ১৫ কেজি আটা, ৪ কেজি ডাল ও ৫ কেজি আলুর একটি প্যাকেট ধরিয়ে দেন। রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক সুমিকে নগদ ৩ হাজার টাকা, আপত্কালীন সময়ের জন্য প্রস্তুত চাল-ডালসহ শুকনা খাবারের প্যাকেট ও একটি মশারি দেন।
এর আগেই রাজশাহীর বাইরে থেকে কয়েকজন সহৃদয় ব্যক্তি সুমিকে সংকটের এ সময়ে খাবার কেনার জন্য কিছু টাকা পাঠিয়েছেন। সুমি জানিয়েছেন বিকাশে পাঠানো সেই টাকা তিনি পেয়েছেন। যারা দিয়েছেন তাদের পরিচয় সুমি ঠিকমতো বলতে পারেননি। তিনি লিখতেও পারেন না। তিনি সবার জন্য দোয়া করেছেন বলে জানিয়েছেন।
সুমির বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায়। স্বামীর মৃত্যুর পরে প্রায় ১৫ বছর আগে দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে রাজশাহী শহরে আসেন সুমি। এখন তিনি শহরে রিকশা চালান।
সুমি বললেন, প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি রাজশাহী শহরে আছেন কিন্তু তাকে কেউ এই শহরের মানুষ মনে করেন না। কারণ তিনি এখনো বড়াইগ্রামের ভোটার। শহরের যেখানেই সাহায্য দেওয়া হয়, সেখানেই তিন যান। গেলেই কথা ওঠে তিনি বাইরের মানুষ। কোনো সাহায্য পান না।
Discussion about this post