বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
গোটা বিশ্ব স্তব্ধ করে ফেলেছে করোনা ভাইরাস। মৃত্যুপুরী বানিয়েছে চীনের পর ইউরোপ-আমেরিকার বেশ কয়েক দেশ। এখনও এর নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষেধক বের করা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঠিক এসময়ে চীনা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ চিকিৎসা বা প্রতিরোধে ‘খুবই কার্যকর’ অ্যান্টিবডির সন্ধান পাওয়া গেছে।
বুধবার (০১ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্স চীনা গবেষকদের বরাতে জানিয়েছে, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় চীনা বিজ্ঞানীদের একটি দল সম্ভাব্য ওষুধ খুঁজতে গিয়ে কার্যকর অ্যান্টিবডি পেয়েছেন। আলাদা করে ফেলা এসব অ্যান্টিবডি নতুন করোনা ভাইরাসকে কোষে প্রবেশে বাধা দেওয়ায় অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।
বেইজিংয়ের সিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝাং লিংকি জানিয়েছেন, তার দলের সন্ধান পাওয়া অ্যান্টিবডি দিয়ে তৈরি ওষুধ বর্তমান পদ্ধতির চেয়ে অধিক কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে এটিকে তিনি ‘বর্ডারলাইন’ বা ‘সীমান্তরেখা’ বলছেন। এর আগে এ রকম প্লাজমা বা রক্তরস পদ্ধতিতে চিকিৎসা করার নজির রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন এ বিজ্ঞানী।
এর আগে গত জানুয়ারির শুরুতে এই গবেষক দলটি শেনঝেনে থার্ড পিপল হাসপাতালে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়া রোগীদের রক্তে অ্যান্টিবডি বিশ্লেষণ শুরু করেছিলেন। এরপর তারা ২০৬টি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি আলাদা করেন। যার ভাইরাসের প্রোটিনের সঙ্গে আবদ্ধ হওয়ার একটি জোরালো ক্ষমতা রয়েছে।
এই অ্যান্টিবডি আলাদা করার পর দলটি আরও একটি পরীক্ষা চালায়। এতে অ্যান্টিবডিগুলো ভাইরাসকে কোষে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখতে পারে কি-না, তা পরীক্ষা করা হয়।
প্রথম ২০ বা এর বেশি অ্যান্টিবডির মধ্যে পরীক্ষায় দেখা যায়, চারটি অ্যান্টিবডি ভাইরাসের প্রবেশ ঠেকিয়ে দিচ্ছে। এর মধ্যে আবার দুটি খুব ভালোভাবে কাজ করছে।
এরপর গবেষকরা সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যান্টিবডিটি শনাক্ত করেন। একইসঙ্গে আলাদা করা অ্যান্টিবডিগুলো সংযুক্ত করে করোনা ভাইরাসের পরিবর্তনের ঝুঁকি কমাতে চেষ্টা করছেন।
ঝাং লিংকি এও বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগ্রহী ওষুধ নির্মাতারা এটি নিয়ে পরীক্ষা করতে পারবেন। প্রথমে পশু ও পরে মানুষের ওপর এটি প্রয়োগ করা হবে। গবেষক দলটি এরইমধ্যে বায়োটেক ফার্ম ব্রি বায়োসায়েন্সের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে এ বিজ্ঞানী।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে চীন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২০৩টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। এই সংক্রমণে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন নয় লাখ ৩৬ হাজার ১৭০ জন। এরমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪৭ হাজার ২৪৯ জনের। সুস্থ হয়েছেন এক লাখ ৯৪ হাজার ৫৭৮ জন।
Discussion about this post