সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই যৌথভাবে তৈরি করেছে ডিজিটাল ডাটা বিশ্নেষণ প্ল্যাটফর্ম। বিগ ডাটা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে।
প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে সহায়তা দিয়েছে মোবাইল অপারেটর রবি। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইমিগ্রেশেন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কল সেন্টার ৩৩৩, ১৬২৬৩ এবং ইউএসএসডি ৩৩৩২ এর নম্বরে কল করা গ্রাহকদের দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশে কোথায়, কি ধরনের করোনা পরিস্থিতি বিরাজ করছে সে সম্পর্কে সরকারকে তথ্য দেওয়া হবে।
বর্তমানে এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সব মোবাইল গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করে করোনা সংক্রমণজনিত পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি ডিজিটাল ম্যাপ তৈরিও সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, এটুআইয়ের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী রবির চিফ কর্পোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার শাহেদ আলম অংশ নেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে চিকিৎসরকরাও এক ধরনের বিভ্রান্তিতে আছেন। যে কারণে কোথাও কোথাও সাধারণ অসুখে চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিএমএ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এবং প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এখন থেকে এ সমস্যা হবে না বলে তিনি আশা করেন।
তিনি আরও জানান, এর আগে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা প্রতি উপজেলা থেকে কমপক্ষে দু’জন করে ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে যে তথ্য দিয়েছিলেন, তাও ভুল। এ ধরনের কোনো নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী দেননি। বরং তিনি জানান, প্রতি উপজেলায় তিনজন করে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিম সন্দেহভাজন রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করবে।
প্রতিমন্ত্রী পলক জানান, বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে বিগ ডাটা বিশ্নেষণ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির মাধ্যমে করোনা সংক্রমণজনিত পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশেও সেই ব্যবস্থাটিই করা হচ্ছে রবির তৈরি করা এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে।
এ পদ্ধতির ব্যাখ্যা দিয়ে আনীর চৌধুরী বলেন, সব অপারেটর থেকে আসা কলের তথ্য সরকারের জাতীয় টেলিযোগাযোগ মনিটর কেন্দ্রের (এনটিএমসি) মাধ্যমে সমন্বিত করে সেটি এই প্ল্যাটফর্মে বিশ্লেষণ করা হবে। এই বিশ্লেষণ থেকে দিক-নির্দেশনা পাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরইমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কল সেন্টার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার কল বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, কল করা গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা হবে না এবং বিশ্বস্বীকৃত পদ্ধতিতে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। ফলে ‘ডাটা প্রাইভেসি’ নিয়ে আশঙ্কার কোনো কারণ নেই।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও জানান, বর্তমানে ঢাকার ৯টি স্থান থেকে করোনা পরীক্ষা করা যাবে। এপ্রিল মাসের মধ্যে দেশের ২৮টি স্থান থেকে করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ করেই প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়েছে। কভিড-১৯ নতুন রোগ হওয়ার কারণে এই রোগ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংসস্থার নির্দেশনাও কয়েকবার বদল হয়েছে।
Discussion about this post