নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বিশ্বের কয়েকটি দেশে ব্যবহৃত অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ ‘ফাভিপিরাভির’ বাংলাদেশেই উৎপাদন করেছে দেশীয় দুই ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি বেক্সিমকো ও বিকন।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা রাব্বুর রেজা জানান, যেসব হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে সেসব হাসপাতালে সরাসরি তারা এই ঔষধ সরবরাহ করবেন।
বিকন ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই ঔষধগুলো উৎপাদন করতে আমাদের মাত্র একমাস সময় লেগেছে। ব্যাপরটি আসলেই সন্তুষ্টিজনক।’ তিনি জানান, পর্যাপ্ত কাচামালের সরবরাহ এবং তথ্য উপাত্ত না থাকায় ঔষধ তৈরির এই প্রক্রিয়াটি সহজ ছিল না।
তিন আরও জানান, প্রথম ধাপে বিকন ফার্মা ১০০ রোগীর জন্য এই ঔষধটি উৎপাদন করেছে এবং এই মাস থেকে উৎপাদন আরও বাড়াবে।
আ জ রবিবার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে বিকন ফার্মা এই ঔষধগুলো হস্তান্তর করবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, দেশীয় দুই ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির উৎপাদিত এই ঔষধগুলো ফার্মেসিতে না দিয়ে সরকারের কাছে এবং করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করবে এই দুই প্রতিষ্ঠান।
নভেল করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় জাপানে তৈরি ফাভিপিরাভির (favipiravir) ওষুধ পুরোপুরি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে
জাপানের ফুজিফিল্ম হোল্ডিংস করপোরেশনের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের তৈরি ফাভিপিরাভির (favipiravir) নামের ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কার্যকর ফল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ঝ্যাং শিনমিন।
সম্প্রতি ওষুধটি উহান ও শেনঝেন অঞ্চলের অন্তত ৩৪০ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা হয়। মঙ্গলবার এর ফলাফল প্রসঙ্গে শিনমিন বলেন, ‘এটি খুবই নিরাপদ ও চিকিৎসায় পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে।’
জাপানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, শেনঝেন অঞ্চলে যেসব রোগীকে ফাভিপিরাভির দেয়া হয়েছিল তারা মাত্র চারদিনের মধ্যেই করোনামুক্ত হয়েছেন। বিপরীতে, অন্য ওষুধ ব্যবহারকারীদের সুস্থ হতে সময় লেগেছে প্রায় ১১ দিন।
চিনের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শেনঝেন প্রদেশে যেসব করোনা পজিটিভ রোগীদের এই ‘ফাভিপিরাভির’ ওষুধটি দেওয়া হয়েছে, তাদের শরীর থেকে চার দিনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ নেগেটিভ পাওয়া গিয়েছে। তুলনায় যারা স্রেফ আইসোলেশনে ছিলেন, তাদের নেগেটিভ ফল পাওয়া গিয়েছে ১১ দিনে। এমনকি এক্স রে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, এই ওষুধ খাওয়ার দরুন, ফুসফুসের সংক্রমণ ৯১ শতাংশ কমেছে। তুলনায় যারা অন্যান্য ওষুধ খাচ্ছে, তাদের কমেছে ৬২ শতাংশ।
চীনের মতো জাপানেও করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে স্বল্প ও মাঝারি মাত্রায় উপসর্গ দেখা দেয়া রোগীদের চিকিৎসায় ফাভিপিরাভির ব্যবহার করা হচ্ছে।
Discussion about this post