শিক্ষার আলো ডেস্ক
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য হলো অস্ট্রেলিয়া। গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৮ লাখের বেশি শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। প্রতিবছর অস্ট্রেলিয়ার সরকার নানান শিক্ষাবৃত্তির আয়োজন করে থাকে। যেমন অস্ট্রেলিয়ার সরকারি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস, ইন্টারন্যাশনাল পোস্টগ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপ, জন অলরাইট ফেলোশিপ, ইউনিভার্সিটি অব সিডনি ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ স্কলারশিপ, ম্যাকোয়ারি ইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে।
পড়াশোনার সবকিছুই বিনা মূল্যে
‘অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপ’-এর আওতায় অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদেরও বিনা খরচে পূর্ণ সময়ের স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পড়ার সুযোগ দেবে দেশটির সরকার। এই স্কলারশিপের জন্য নির্বাচিতদের পুরো খরচ বহন করে অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড। এই প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদি অধ্যয়ন ও গবেষণার সুযোগ পাবেন। সাধারণত অন্যান্য শিক্ষাবৃত্তি মাস্টার্স পর্যায়ের জন্য হলেও এই বৃত্তির জন্য ব্যাচেলর পর্যায়েও আবেদন করা যাবে। অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাচেলর ডিগ্রিতে বছরপ্রতি গড়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়। তবে অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপে বলতে গেলে প্রায় সবকিছুই বিনা মূল্যে দেয় অস্ট্রেলিয়ার সরকার।
সুযোগ-সুবিধা
- আসা-যাওয়ার বিমান ভাড়া
- সম্পূর্ণ টিউশন ফি
- যাবতীয় পড়াশোনার খরচ
- থাকা-খাওয়ার খরচ
- বইপত্র ও পড়ালেখার আনুষঙ্গিক জিনিস কেনার খরচ
- ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী থাকার খরচ
- বৃত্তি প্রোগ্রাম শুরুর আগে পরিচিতিমূলক একাডেমিক ক্লাসের ব্যবস্থা
- স্বাস্থ্যবিমা ও যাবতীয় চিকিৎসার খরচ
- যেসব শিক্ষার্থী ইংরেজিতে কথা বলায় দুর্বল, তাদের জন্য প্রি-ইংলিশ কোর্স
- রিসার্চ ভাতা
- জীবনযাত্রা ভাতা
আবেদনের যোগ্যতা ও শর্তাবলি
- ন্যূনতম ১৮ বছর বয়সী হতে হবে।
- অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব থাকা যাবে না।
- অবিবাহিত হতে হবে।
- বৃত্তি নিয়ে পড়তে হলে আপনাকে সেখানে স্কলারশিপ প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার দুই বছরের মাথায় স্টুডেন্ট হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ছাড়তে হবে। স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও আপনি অন্য উদ্দেশ্যে সেখানে থেকে গেলে জরিমানা দিতে হবে। জরিমানার পরিমাণ আপনার মোট টিউশন ফি ও স্কলারশিপে অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য খরচের সমপরিমাণ অর্থ।
- সেনাবাহিনীর সদস্য হওয়া যাবে না।
- আগে অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপ পেয়েছেন এমন কেউ আবার আবেদন করতে পারবেন না। তবে ৮ বছর আগে এই স্কলারশিপ নিয়ে পড়েছেন এবং পড়া শেষে অস্ট্রেলিয়ার বাইরে চলে গেলে পুনরায় আবেদন করতে পারবেন।
- অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকা যাবে না।
- একই ডিগ্রির জন্য পুনরায় আবেদন করা যাবে না। যেমন আপনি যদি পিএইচডিধারী হয়ে থাকেন, তাহলে আবারও মাস্টার্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- আগের একাডেমিক রেকর্ড
- ইংরেজি ভাষা দক্ষতা
- টিউশন ফি দেওয়ার সক্ষমতার প্রমাণ পাঠ্যক্রমবহির্ভূত কার্যক্রমের সার্টিফিকেট সামাজিক কর্মকাণ্ডের রেকর্ড স্টুডেন্ট ভিসায় আবেদন।
- অস্ট্রেলিয়ায় বৃত্তির আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে আলাদা করে স্টুডেন্ট ভিসায়ও আবেদন করতে হবে।
আবেদনের প্রক্রিয়া
অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে বৃত্তির বিস্তারিত তথ্য ও শর্তাবলি উল্লেখ করা থাকে। ওয়েবসাইট থেকে বৃত্তির জন্য আবেদন করতে তাদের গ্রহণযোগ্য ন্যূনতম যোগ্যতা, কোনো কোনো বিষয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যাবে, বৃত্তিটির কী কী সুবিধা থাকছে তা আগে জেনে নিন। সেখান থেকেই বৃত্তির আবেদনপত্র, স্টেটমেন্ট অব পারপাস লেটারের নমুনা সংগ্রহ করুন। আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে ক্ষেত্রবিশেষে আগেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হতে পারে। সতর্কতার সঙ্গে সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করুন এবং সব প্রমাণাদির কাগজপত্রসহ অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপ সংস্থার প্রদেয় পন্থায় তাদের কাছে পাঠিয়ে দিন। আবেদন মঞ্জুর হলে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
ওয়েবসাইট: (http://www.dfat.gov.au/)
আবেদনের শেষ সময়: ২৯ এপ্রিল, ২০২২ইং
Discussion about this post