শিক্ষার আলো ডেস্ক
টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কাকরাইলে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার গভীর রাতেও রাজপথ ছাড়েননি তারা। তিন দফা দাবি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মাহফুজ বলেন, যেকোনো আন্দোলন সরকার শুনতে রাজি আছে, বসতে রাজি আছে, কথা বলতে রাজি আছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকটের বিষয়ে অবগত।উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়।
রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে বিক্ষোভরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা না করে সড়ক ছাড়বেন না।
সরেজমিন দেখা গেছে, গভীর রাতেও কাকরাইলে সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। অনেকে রাত কাটিয়েছেন সড়কে শুয়ে, সড়কেও ঘুমিয়েছেন অনেকে। গভীর রাতেও থেমে থেমে স্লোগান দিতে দেখা গেছে তাদের।এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়’, ‘বাজেট কাটছাঁট চলবে না’, ‘হামলার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে একে একে ২৫টি বাসভর্তি জবি শিক্ষার্থ ী কাকরাইল মোড়ে এসে পৌঁছায়। এসব বাসে প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ নেন। আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনের সড়ক ও কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন এলাকা।
আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অতীতে বারবার আবাসন সংকট সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। এবার প্রতিশ্রুতি নয়; তিন দফা দাবির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন ছাড়া তারা ক্যাম্পাসে ফিরবেন না।
ঙডশিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা দ্রুত সমাধান করা হবে বলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের আশ্বাসকে প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা১‘। ইতোমধ্যে আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা।
এর আগে, বুধবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনা অভিমুখে যাত্রা করে কয়েকশত শিক্ষার্থী। পথিমধ্যে পুলিশের বেশ কয়েকটি ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
তবে, কাকরাইল মোড় পৌঁছালে সেখানে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তারা। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ আহত হয় অন্তত ৩৮ জন।
জানা গেছে, গত সোমবার শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও শিক্ষক সমিতির সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে জবির বাজেট বৃদ্ধি ও আবাসন সংকট নিরসন বিষয়ে আলোচনা হলেও দাবি মানা হয়নি বলে অভিযোগ তোলে শিক্ষার্থীরা।
Discussion about this post