শিক্ষার আলো ডেস্ক
নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন হয়েছে।এ উপলক্ষে আজ রবিবার ‘প্রতিষ্ঠার ৭২ বছরে সৃজন, গবেষণা, নেতৃত্বে দেশ ও বিশ্বের পথপ্রদর্শক’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার।
রোববার (৬ জুলাই) জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
এদিন সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও প্রশাসন ভবন-১ এর সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা অবমুক্তকরণ করা হয় এবং এরপর শোভাযাত্রা হয়।
বেলা ১১টায় বৃক্ষরোপণ, বেলা সাড়ে ১১টায় সিনেট ভবনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে।
বেলা ১১টায় সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মতিয়ার রহমান। উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবের সভাপতিত্বে এই আয়োজনে আলোচক ছিলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইমেরিটাস এ কে এম আজহারুল ইসলাম।
শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আসতে পেরেছি এজন্য আয়োজনকারী এবং উপাচার্যকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান রয়েছে আমাদের জাতীয় জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে। এই জুলাই মাসে এ ধরনের একটা অনুষ্ঠানে আসতে পেরে, তরুণদের সামনে আসতে পেরে ভালো লাগছে।
তিনি আরও বলেন, কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য থেকে আমরা যেন বিচ্যুত না হই। নতুন দেশ গঠনের প্রত্যয়ে আমাদের শিক্ষকদের অন্যতম মূল দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষাঙ্গণের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, তা সত্ত্বেও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। বর্তমান সরকারের লক্ষ্য সুদূরপ্রসারী সংস্কার, কিন্তু রাতারাতি এটি সম্ভব নয়। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবাইকে ধৈর্যের সাথে অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আমাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে বিগত ৭২ বছর কেমন কাটলো। পাশাপাশি আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর আগামীর জন্য পরিকল্পনা নিয়ে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই কালে আমাদের মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের এগিয়ে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা হবে বাধাহীন।
প্রসঙ্গক্রমে উপাচার্য বলেন, স্বৈরশাসন মানুষের স্বভাব নষ্ট করে দেয়। মানুষের আত্মপরিচয়কে ধ্বংস করে। বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়, তাই দীর্ঘকালের স্বৈরশাসন বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকেও কুলুষিত করেছে, এর আত্মসচেতনতাকে নাশ করেছে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতাকে আমাদের দেশ গঠনে কাজে লাগাতে হবে। আজ আমরা এক ক্রান্তিলগ্নে আছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় বাজারের চাহিদা বিবেচনা করে উদ্ভাবক ও আবিষ্কারক তৈরি করতে চাই।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারকপত্রের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। স্মারকপত্রটিতে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে দুইজন প্রফেসর ইমেরিটাসসহ ১১ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের স্মৃতিচারণমূলক লেখা স্থান পেয়েছে।
১৯৫৩ সালের এই দিনে যাত্রা শুরু হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের।
Discussion about this post