শিক্ষার আলো ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ, যা গড়ে প্রতি বারো জনে একজন। এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে লিভার সিরোসিস ও ক্যানসারে মৃত্যু ঘটছে নিয়মিত। বাংলাদেশেও হেপাটাইটিস বি একটি বড় জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিবছর এই ভাইরাসে মারা যান প্রায় বিশ হাজার মানুষ। এমন প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচি সম্পন্ন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদল।
উল্লেখ্য, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার ২৬ নম্বর হলো ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য ও সার্বজনীন চিকিৎসা’। আর এ নির্দেশনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিন প্রদান করেছে জাবির শাখা ছাত্রদল।
গত মে মাস থেকে চলমান এ কর্মসূচিতে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিন প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে তিন ডোজে মোট ৩০ হাজার টিকার ব্যবস্থা করেছে সংগঠনটি।
ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সহযোগিতায়, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের তত্ত্বাবধানে এবং জাবি ছাত্রদলের ব্যবস্থাপনায় এ কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথম ডোজ প্রদান শুরু হয় ১৪ মে। এরপর ১৬-২৪ জুন দেওয়া হয় দ্বিতীয় ডোজ। একই সময়ে প্রথম ডোজও সীমিত পরিসরে চলমান ছিল। তৃতীয় ডোজের কার্যক্রম শুরু হয় ১৭ জুলাই এবং শেষ হয় ২৪ জুলাই। তবে যেসব শিক্ষার্থী এখনো ডোজ গ্রহণ করেননি, তাদের জন্য আগামী মাসেও টিকা গ্রহণের সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘বিনামূল্যে হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিনেশন একটি ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন ছিল। আগে কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র সংগঠন এমন উদ্যোগ নিয়েছে কি না, আমার জানা নেই। জাবি ছাত্রদলকে আন্তরিক ধন্যবাদ।’
এছাড়া, শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফয়সাল হোসেন বলেন, ‘ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে আমাদের টিকা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি এবং সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে৷ এ ছাড়া টিকা প্রদানের আগে স্ক্রিনিং করে যে সকল শিক্ষার্থী হেপাটাইটিস-বি পজেটিভ হয়েছেন, তাদের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত চিকিৎসার দায়িত্ব আমরা নিচ্ছি।’
জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, ‘গত মে মাস থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি এখন শেষ পর্যায়ে। পাঁচ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় অংশীজনের সাড়া পেয়েছি। ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি নিয়ে ছাত্রদল কাজ করে যাবে।’
Discussion about this post