শিক্ষার আলো ডেস্ক
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে দুটি দাবি মেনে নিয়েছে প্রশাসন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়ে শেষ হয় রাত সাড়ে ১১টায়। এরপর সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শহিদুল হক।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদীয় সম্মেলন কক্ষে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল। এ সময় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলা আলোচনা শেষে রাত ১২টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক। এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৪০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে নিঃশর্ত আলোচনায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সমন্বিত ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার পর উপাচার্যের ক্ষমা চাওয়া ও হামলাকারী বহিরাগতদের গ্রেপ্তারসহ ছয় দফা দাবির নতুন কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় দিনের মতো তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইন অবরোধ করেছিলেন। পরে সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ গিয়ে ব্যাংকের শাখা এবং ট্রেজারি ভবনে তালা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক বলেন, ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শিক্ষার্থীদের হলে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হবে।
কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে তিনি বলেন, আপাতত তিন ডিগ্রি অর্থাৎ একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। আর অন্যান্য বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আহসানুল হক হিমেল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। এ সময় ভার্চুয়ালি উপাচার্য স্যার যুক্ত ছিলেন। আমাদের সবগুলো দাবি মেনে নিতে হবে। কারণ, আমাদের সবগুলো দাবি যৌক্তিক। সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাহার, এক সপ্তাহের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিক করা, বহিরাগতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হয়রানি না করা এবং কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে সিন্ডিকেট সভায় আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে সভায় সবার সম্মতি এসেছে। এসব আশ্বাসে বুধবারের আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে আবার কর্মসূচি দেওয়া হবে।
অন্য চারটি দাবি হলো-
১. এই প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর শিক্ষকদের মদদে বহিরাগত দিয়ে হামলার দায়ে প্রক্টোরিয়াল বডিকে পদত্যাগ করতে হবে। ২. বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দ্বারা ককটেল বিস্ফোরণ, লাইব্রেরি ও স্থাপনা ভাঙচুর এবং দেশীয় অস্ত্র দ্বারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তার ঘটনার জন্য উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ৩. হামলার সঙ্গে জড়িত শিক্ষকবৃন্দ: কৃষি অনুষদের আসাদুজ্জামান সরকার, তোফাজ্জল স্যার, শরীফ আর রাফি স্যার, কামরুজ্জামান স্যার, পশুপালন অনুষদের বজলুর রহমান মোল্যা স্যার, জেনেটিক্সের মুনির স্যার, ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের আশিকুর রহমান স্যার এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ৪. গত ১ মাস ধরে চলমান যে একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন করে আসছি, সেই একক ডিগ্রি অবিলম্বে দিতে হবে। তিনটি ভিন্ন ডিগ্রি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
Discussion about this post