শিক্ষার আলো ডেস্ক
তিন যুগ পর অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (চাকসু) নির্বাচনে অভাবনীয় জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ২১ সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ১৯টিতে এবং পাঁচটি সদস্য পদের সবগুলোতেই জয় পেয়েছে জোট ।
শিবির প্যানেল থেকে পরাজিত হয়েছে মাত্র ২টি পদে। পরাজিত হয়েছে সহ খেলাধুলা সম্পাদক এবং এজিএস পদে। এজিএস পদে নির্বাচিত হয়ে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের আইয়ুবুর রহমান তৌফিক।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় সংসদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
এতে দেখা যায়, ভিপি পদে ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’-এর ইব্রাহীম হোসেন রনি ৭ হাজার ৯৮৩ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। জিএস পদে একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব পেয়েছেন ৮ হাজার ৩১ ভোট। এজিএস পদে ছাত্রদলের আইয়ুবুর রহমান তৌফিক ৬ হাজার ৪৪১টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
অন্যান্য সম্পাদকের মধ্যে খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক মোহাম্মদ শাওন, সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে সতন্ত্র প্রার্থী তামান্না মাহবুব স্মৃতি, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে হারেজুল ইসলাম (হারেস মাতাব্বর), সহ-সাহিত্য সম্পাদক জিহাদ হোসাইন, দফতর সম্পাদক পদে আবদুল্লাহ আল নোমান, সহ-দফতর সম্পাদক জান্নাতুল আদন নুসরাত, ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে নাহিমা আক্তার দ্বীপা, সহ-ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে জান্নাতুল ফেরদাউস রিতা, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক পদে মাহবুবুর রহমান, গবেষণা ও উদ্ভাবন সম্পাদক পদে তানভীর আঞ্জুম শোভন, সমাজসেবা ও পরিবেশ সম্পাদক তাহসিনা রহমান, স্বাস্থ্য সম্পাদক আফনান হাসান ইমরান, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক মোনায়েম শরীফ, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক মেহেদী হাসান সোহান, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক পদে মো. ইসহাক ভূঁঞা, সহ-যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক ওবাইদুল সালমান, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক ফজলে রাব্বি তৌহিদ এবং পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন মাসুম বিল্লাহ।
আরও পড়ুনঃ চাকসুর ভিপি ইব্রাহীম রনি, জিএস সাঈদ
গতকাল বুধবার সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টায়। চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়েছেন ৪৯৩ জন।
চাকসু নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও ফলাফল প্রকাশের আগে বেশ কিছু জায়গায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বুধবার রাত একটার পর দুই হলের ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে রাত ৩টার ১৫ মিনিটে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধের পর অধ্যাপক কামাল মুক্ত হন।
এর আগে, দিনভর সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হলেও ফলাফল প্রকাশের আগে বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের বাইরে ছাত্রদলের সমর্থনে বিএনপি ও ছাত্রশিবিরের সমর্থনে জামায়াতের নেতাকর্মীরা আশেপাশে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তার পাশে থাকলেও অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। রাত ১টা পর্যন্ত তাদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাতেই ক্যাম্পাসে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
Discussion about this post