শিক্ষার আলো ডেস্ক
পাঁচ শতাংশ বাড়িভাড়া ( নুন্যতম২০০০ টাকা ) বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপনকে প্রত্যাখান করে আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা।
রোববার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় শহীদ মিনারে অষ্টম দিনের মতো অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। সকালে কর্মসূচি চলাকালে প্রজ্ঞাপনের খবর আসলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখান করে আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন।
আজ এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা শহীদ মিনার থেকে শিক্ষা ভবন অভিমুখে ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি পালন করেন।
শিক্ষকরা বলেন, আমরা এই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলছি, জাতির মেরুদণ্ড শক্ত করছি। কিন্তু আজও আমরা নিজেদের জীবনে নিরাপত্তা ও স্বীকৃতির নিশ্চয়তা পাই না। বছরের পর বছর ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা নানা প্রতিশ্রুতি শুনেছেন, কিন্তু বাস্তবে কোনো ফল মেলেনি। শিক্ষক হিসেবে আমাদের জীবনে এমন এক অবস্থা এসেছে, যেখানে ‘খালি থালা হাতে’ রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। এটা শুধু প্রতীকী প্রতিবাদ নয়, এটা আমাদের অন্তরের কান্না-বঞ্চনা ও অসম্মানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই শিক্ষা উপদেষ্টা পুরো প্রক্রিয়াকে জটিল করছেন। গণঅভ্যুত্থানের সরকার কাছ থেকে এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয় বলেও জানান তারা।
মূল বেতনের ওপর ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার (বোনাস) দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। গত আগস্ট মাসে তারা ঢাকায় মহাসমাবেশ করে মূল বেতনের ওপর শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা দেওয়ার দাবি তোলেন।
আরও পড়ুনঃআন্দোলনের ৭ম দিনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা, আজ কালো পতাকা মিছিল
কিন্তু তাদের দাবি উপেক্ষা করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাড়িভাড়া মাত্র ৫০০ টাকা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসে সে প্রজ্ঞাপন সামনে এলে তা প্রত্যাখ্যান করেন শিক্ষকরা।
শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন আজিজী জানান, আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপনটি দেওয়া হয়েছে, সেটা আসলে আগেই প্রস্তুত ছিল। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বারবার কথা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছি—এই প্রজ্ঞাপন আমাদের দাবির প্রতিফলন নয়। আমাদের দাবি ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা ও ১,৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা।
এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, ৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া-ভাতার প্রজ্ঞাপন আমাদের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয়। কিন্তু ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত আমাদের সব কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলন এখন রাজধানীর বাইরে জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছেন না। তারা বিদ্যালয়ের আঙিনা বা শিক্ষক লাউঞ্জে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
Discussion about this post