শিক্ষার আলো ডেস্ক
রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে দাবি মানার আশ্বাস দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
রবিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষক নেতারা। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে রাত পৌনে ১০টার দিকে শহীদ মিনারে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (কাসেম-শাহীন) সভাপতি প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কাসেম এবং ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয়ক মু.মাহবুবুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ, অন্যতম সমন্বয়ক মোহাম্মদ আনোয়ার উল্যা এবং শিক্ষকদের এই আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তৃতীয় ধাপে সুপারিশ পাওয়া সহকারী শিক্ষক মো. মহিব বুল্লাহসহ অন্যান্য শিক্ষকরা।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ বলেন, ‘আগামীকাল বিকাল ৫টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর এ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কর্মবিরতি কর্মসূচি আপাতত স্থগিত, তবে অবস্থান কর্মসূচি চলবে।’
তবে রাতে শিক্ষকদের চাপে আবারও নতুন করে কর্মবিরতি চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষক নেতারা। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, ‘অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি কর্মবিরতিও চলবে।’
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের রাতে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবির বিষয়ে আজ রবিবার (৯ নভেম্বর) শিক্ষকদের প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষকদের প্রধান দাবিগুলো ছিল সহকারী শিক্ষকদের বর্তমান বেতন স্কেল ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা; শিক্ষকদের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়ে জটিলতার অবসান এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি।
আগামী কাল বিকাল ৫টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবিতে শনিবার (৮ নভেম্বর) সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। শনিবার (৮ নভেম্বর) পুলিশি নির্যাতনের পর সারাদেশব্যপী রবিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতি চলছিল।
শিক্ষকদের দশম গ্রেডে আনার যুক্তি নেই, বললেন উপদেষ্টা
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার গতকাল খুলনায় মতবিনিময় সভা শেষে বলেছেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদটি ১৩তম গ্রেডের। এটিকে এক লাফে দশম গ্রেডে আনার সপক্ষে তেমন কোনো যুক্তিই নেই।
তিনি বলেন, বেশির ভাগ সহকারী শিক্ষক মনে করেন দশম গ্রেডের এ দাবি যৌক্তিক নয়। প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষকদের সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে তাদের দশম গ্রেডে আনা; এটি সম্ভব নয়। তারা যেন ১১তম গ্রেড পেতে পারেন, সেজন্য আমরা কাজ করছি। তাদের এ মুহূর্তে আন্দোলনে যাওয়াটাও যৌক্তিক নয়।
উপদেষ্টা বলেন, সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির যে বিষয়টি, সেটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলেছে সরকারের নীতি অনুযায়ী শতভাগ পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। আমরা সেজন্য ৮০ শতাংশ পদোন্নতি দিয়েছি। আগে ছিল ৬৫ শতাংশ। বাকি যে ২০ শতাংশ থাকছে, সেটা সরাসরি নিয়োগ করা হবে।
















Discussion about this post