শিক্ষার আলো ডেস্ক
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি দেশের দ্বিতীয় প্রজন্মের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি। ২০০২ সালে মাত্র ১০৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু করা বিশ্ববিদ্যালটির বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ হাজারেও বেশি। প্রায় দেড় যুগ হতে চলা প্রতিষ্ঠানটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সেরাদের একটি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. এ এফ এম মফিজুল ইসলাম। কোহিনূর কেমিক্যাল কম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রেজাউল করিম সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান।
প্রতিষ্ঠার কথা
কম খরচের মানসম্পন্ন শিক্ষাদান ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার কথা ভেবেছিলেন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী মরহুম আফজাল হোসেন। তিনি সরকারের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমতি নিয়েছিলেন, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তবে আর্থিক সংকটে বিশ্ববিদ্যালয়টি চালু করতে পারছিলেন না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসেন শিক্ষানুরাগী মো. রেজাউল করিম । সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিকে একটি মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যোগী হন তিনি। এই মহৎ কাজে তাঁর সংগী হন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অ্যাডভোকেট নিয়াজ আহমেদ, হারুন-অর-রশীদ খান ও জহিরুল হক। এর পর সবাই মিলে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ শুরু করেন।
শিক্ষাক্রম ও পাঠদান পদ্ধতি :
বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অন্যতম সদস্য এম কামালউদ্দিন চৌধুরী বললেন, ‘২০০২ সালের জানুয়ারিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির অনুমোদনে ১০৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির যাত্রা শুরু। এখন ১২ হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয় বিরাট এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। ১৩টি বিভাগের অধীনে ১৯টি প্রোগ্রাম আছে।
স্নাতক পর্যায়ের বিভাগগুলো হলো—ফার্মাসি, আর্কিটেকচার, সিএসই, ইইই, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, বিবিএ, অর্থনীতি, বাংলা, ইংরেজি, ইসলামিক স্টাডিজ, আইসিটি ও এলএলবি। এগুলোর মধ্যে সিএসই, টেক্সটাইল ও ইইই বিভাগে রেগুলার ও সান্ধ্যকালীন ডিগ্রি দেওয়া হয়। সিএসই বিভাগে রেগুলার ও উইকএন্ডে পড়ালেখার সুযোগ আছে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এমবিএ, ই-এমবিএ, এলএলএম, এমডিএস (মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ), এমএ ইন ইংলিশ, ইসলামিক স্টাডিজ ও এমএ ইন বাংলা ডিগ্রি দেওয়া হয়। কিছুদিনের মধ্যে নার্সিং টেকনোলজি, হেলথ কেয়ার ম্যানেজমেন্ট, সাংবাদিকতা, পাবলিক হেলথের মতো যুগোপযোগী বিভাগ চালু করা হবে।সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির প্রতিটি বিভাগের কারিকুলাম বা শিক্ষাক্রম আন্তর্জাতিক মানের, শিক্ষকরা অভিজ্ঞ, বিজ্ঞানের প্রতিটি বিভাগে আলাদা গবেষণাগার আছে। বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুবিধা আছে। ক্যাম্পাসটি রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত।’
আরও পড়ুন-আইইউবিএটি: ক্যারিয়ার শুরুর সুযোগ মেলে দেশ-বিদেশে
পাঠদান পদ্ধতি নিয়ে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ইংরেজী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলিয়া শাহনুর আমীন বললেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে তিনটি সেমিস্টার হিসেবে অনার্সে মোট ১২ সেমিস্টারে পাঠদান করা হয়। শেষ সেমিস্টারে ইন্টার্নশিপ বা থিসিস অথবা প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করতে হয়। প্রতিটি কোর্সের শুরুতে কোর্স আউটলাইন, সিলেবাস, সহায়ক বইগুলোর নাম সরবরাহ করা হয়। প্রত্যেক ক্লাসের শেষে লেকচারশিট প্রদান করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীরা দলগত আলোচনা ও প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তাদের পড়া সম্পন্ন করে। ফলে তারা ভালো ফল করতে পারে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফখরুল হাসান বলেন, ‘একাডেমিক পড়ালেখার পাশাপাশি টেক্সটাইল, ফার্মাসি ইত্যাদি বিষয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে আরো জ্ঞান লাভ করে।’ তিনি বললেন, ‘২০১৩ সালের ফল সেমিস্টার থেকে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিতে ওপেন ক্রেডিট ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ফলে পছন্দের কোর্স নিয়ে অল্প দিনের মধ্যেই ছাত্র-ছাত্রীরা ডিগ্রি লাভ করতে পারে। পাঠদানের মাধ্যম ইংরেজি বলে তাঁরা ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হয়ে ওঠে।’
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘ভর্তির পর থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের ইংরেজিতে বাধ্যতামূলক কোর্স করতে হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের সব কোর্স ইউজিসি অনুমোদিত এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডিগ্রি বলে পাস করে ছাত্র-ছাত্রীরা ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি পায়। সাউথইস্টে ইউজিসির নিয়মের বাইরে কোনো ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয় না।’
সহনীয় খরচে মানসম্পন্ন শিক্ষা
বিশ্ববিদালয়ের ভর্তি কার্যক্রম সম্পর্কে জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, ‘আমরা সহনীয় খরচে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করি। অনেক শিক্ষাবৃত্তি দিই। এইচএসসির ফলের ওপর শতভাগ বৃত্তি, প্রতি সেমিস্টারের ফলের ভিত্তিতেও শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের ৫০ শতাংশ বৃত্তি দেওয়া হয়। একই পরিবারের সদস্য হলে, স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ ছাড় আছে। খেলোয়াড়, বিতার্কিক, শিল্পীসহ সহশিক্ষা কার্যক্রমে সাফল্য পাওয়াদের জন্য শতভাগ শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়। উপজাতি ও নারী কোঠায় অতিরিক্ত ১০ ভাগ বৃত্তি আছে। যেকোনো উপজাতি ছাত্র বা ছাত্রী এই বৃত্তি পাবেন। তা ছাড়া বিসিএস ক্যাডারভুক্ত ও প্রতিরক্ষা বিভাগে কর্মরতদের জন্য ৩০ শতাংশ শিক্ষাবৃত্তি রয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েরাই বেশি পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ স্বচ্ছ। লুকানো খরচের খাত নেই।’
লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চায়ও অগ্রণী সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে ছাত্র-ছাত্রীদের ১৫টি ক্লাব আছে। সেগুলো হলো—‘কালচারাল ক্লাব’, ‘গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস ক্লাব’, ‘ডিবেট ক্লাব’, ‘সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাব’, ‘মুভি অ্যান্ড ড্রামা ক্লাব’, ‘ট্যুরিজম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব’, ‘নেচার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ক্লাব’, ‘মডেল ইউনাইটেড নেশনস (মুন) ক্লাব’, ‘ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড লিটারেচার ক্লাব’, ‘বিজনেস ইনোভেশন ফোরাম’, ‘কম্পিউটার ক্লাব’, ‘ফার্মাসি ক্লাব’, ‘টেক্সটাইল ক্লাব’, ‘ইইই ক্লাব’ ও ‘মুট কোর্ট সোসাইটি’। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল (অব.) কাজী ফকরুদ্দিন আহমেদ বললেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো আয়ই বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষক ও শিক্ষা খাতের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করে।সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ।’
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে seu.edu.bd তে লগ ইন করতে পারেন এবং ফোন করতে পারেন 55034128,55034192 নম্বরে।
Discussion about this post