নিজস্ব প্রতিবেদক
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের সর্বজনীন বৈশ্বিক গুরুত্ব, তাৎপর্য ও মূল্যবোধ ধারণ ও প্রতিপালনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
এই ভাষণের বৈশ্বিক তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এটি একটি কালোত্তীর্ণ ভাষণ। এই ভাষণ শুধু ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতিকেই অনুপ্রাণিত করেছিল তা নয়, বরং এটি যুগে যুগে বিশ্বের সব অবহেলিত, বঞ্চিত ও স্বাধীনতাকামী জাতি-গোষ্ঠীকে অনুপ্রেরণা যোগাতে থাকবে।
৭ই মার্চ উপলক্ষে সোমবার ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়াসহ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতি, কারিগরী কর্মচারী সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার।
উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, ‘এই ভাষণ সব দেশ, জাতি ও সম্প্রদায়ের জন্য প্রাসঙ্গিক। এ কারণেই ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে ২০১৭ সালে ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
এর আগে সোমবার সকালে উপাচার্য আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এসময় অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার নেতৃত্বে হলের ৭ই মার্চ ভবনের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এসময় হলের আবসিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
৭ই মার্চ উপলক্ষে সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মাঠে দুই দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (ডিইউপিএস)। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। এসময় সেখানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ডিইউপিএসের উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাসান আল শাফী, টিএসসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর, ডিইউপিএসের সভাপতি রজত পাল, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান প্রমুখ। প্রদর্শনীতে ইংরেজি ‘সেভেন’-এর আকৃতিতে প্রদর্শনী বোর্ড তৈরি করে ৭ই মার্চের ৭০টিরও বেশি দুর্লভ ছবি প্রদর্শন করা হয়।
এছাড়া ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সোমবার বিকেলে ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ মো. আল মামুনের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার, ভাস্কর্য শিল্পী রাশা, ভাস্কর্য শিল্পী উত্তম ঘোষ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সাবেক সদস্য-সচিব সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম মিলন, সংগঠনের সহ-সভাপতি শাহীন সিকদার, রোমান হোসাইন, মুহাম্মদ নুর আলম সরদার, শহীদুল ইসলাম জীবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ ও হাতিরঝিল থানার সভাপতি শেখ সোহরাব হোসেন তামিমসহ প্রমুখ।
আলোচনা সভার শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ সব শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করে সংগঠনের নেতারা। আলোচনা সভা শেষে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে সংগঠনের নেতারা।














Discussion about this post