সম্প্রতি সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে অতিথি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস আরেফিন নগরে আসেন বহুমুখি প্রতিভার জীবন্ত কিংবদন্তি, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও লেখক অধ্যাপক ড.সলিমুল্লাহ খান। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন এবং ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন। আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য(ভারপ্রাপ্ত) ড. শরীফ আশরাফউজ্জামান, উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক সরওয়ার জাহান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইসরাত জাহান, কলা, সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ আলী, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক প্রকৌশলী ড. মোজাম্মেল হক, রেজিস্ট্রার এ এফ এম মোদাচ্ছের আলী, বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক, বিভাগীয় প্রধানসহ কর্মকতারা।
অধ্যাপক ড.সলিমুল্লাহ খান তাঁর সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বল দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার ভিতকে মজবুত করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সরকারিভাবে ৩ লক্ষ প্রাথমিক বিদ্যালয় হওয়া উচিত। দেশের প্রাথমিক শিক্ষার স্তর ষষ্ঠ শ্রেণিতে উন্নীত করা এবং এর মান বৃদ্ধি করলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উন্নত গ্র্যাজুয়েট বের করতে সক্ষম হবে। শ্রেণিকক্ষে ২০ জনের অধিক শিক্ষার্থী থাকা বাঞ্ছনীয় নয় কারণ একই শ্রেণি কক্ষে এর অধিক শিক্ষার্থী হলে শিক্ষক পাঠদানে যথাযথভাবে যত্ন নিতে ব্যর্থ হবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনুবাদভিত্তিক গ্রন্থ প্রকাশের উপর গুরুত্বারোপ করেন। সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠার ২৩ বছরে দুইটি অনুবাদসহ ১১টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে শুনে খুশি হন অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে সাউদার্ন এগিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন-সাউদার্ন ইউনিভার্সিটিতে এসেসমেন্ট অব সিএলও-পিএলও-পিইও বিষয়ক কর্মশালা
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার সংস্কার ছাড়া রাষ্ট্রের উন্নয়ন কোনোভাবেই সম্ভব নয় । দেশের শিক্ষার সঠিক উন্নয়ন সম্ভব নয় যদি না রাষ্ট্র শিক্ষার দায়িত্ব নেয় এবং শিক্ষার বৈষম্য দূরীকরণ ও জাতীয়করণে উদ্যোগী হয়। গণতান্ত্রিক দেশে শিক্ষার বৈষম্য দূরীকরণ এবং শিক্ষার জাতীয়করণের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে শিক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে। বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কতো রকম এক্সপেরিমেন্ট চলছে।” তিনি একটি উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, যেখানে গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের নাম পরিবর্তন করে ‘গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স’ রাখা হয়েছে, সেখানে তারা ইংরেজি শব্দগুলোর বাংলা করে দেয়নি বরং ইংরেজি শব্দকেই বাংলায় লিখেছে। এ ধরনের ভুল, অশিক্ষা এবং কুশিক্ষা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে পারে না।”
অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, অশিক্ষিত থাকা ভালো কুশিক্ষিত হওয়ার চেয়ে। দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা পুনর্গঠন না হলে, এ ধরনের অশিক্ষা ও কুশিক্ষা প্রভাব বিস্তার করতে থাকবে, যা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য বিপদজনক।
Discussion about this post