শিক্ষার আলো ডেস্ক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের গ্যারেজের কাছে গত মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকালে ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা আয়রন রিমুভাল প্লান্ট’-এর শুভ উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন।
এ সময় চবি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল-আমীন, ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আকতার হোসেন, চবি প্রকৌশল দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর নিহাদ করিম চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল আহাদ, উক্ত প্লান্ট বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য ও চবি প্রকৌশল দপ্তরের প্রকৌশলীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) বলেন, আজকের এ দিনটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের একটি প্রয়োজন পূরণ হতে যাচ্ছে এ আয়রন রিমুভাল প্লান্ট উদ্বোধনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, সুপেয় পানি মানুষের মৌলিক অধিকার এবং একটি আধুনিক শিক্ষাঙ্গনের জন্য এটি অপরিহার্য অবকাঠামো। আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সুস্থ জীবনযাপনের জন্য নিরাপদ পানির বিকল্প নেই। এ প্লান্ট শুধু আয়রনমুক্ত পানি সরবরাহ করবে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই উন্নয়নের ধারাবাহিক অগ্রযাত্রায়ও নতুন মাত্রা যোগ করবে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত হবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। ভবিষ্যতে গবেষণা, একাডেমিক কার্যক্রম ও শিক্ষার্থীদের সার্বিক উন্নয়নে নিরাপদ পানি একটি সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। তিনি এ ধরনের মহৎ উদ্যোগ সফল করার জন্য যারা সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমি আজকের এ মহৎ উদ্যোগে উপস্থিত থেকে গর্বিত ও আনন্দিত। দীর্ঘদিন ধরে আমরা লক্ষ্য করছিলাম, পানিতে অতিরিক্ত আয়রনের কারণে আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ক্যাম্পাসে অন্যান্য অবস্থানকারীরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। আজকের এ আয়রন রিমুভাল প্লান্ট উদ্বোধনের মাধ্যমে আমরা একটি বড় সংকট কাটিয়ে উঠতে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন-চবিতে শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবেশবান্ধব ‘ই-কার’ সেবা চালু
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সর্বদাই শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। নিরাপদ পানি সরবরাহ আমাদের অন্যতম অঙ্গীকার। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ার লক্ষ্যও এগিয়ে যাবে। এ প্লান্ট শুধু পানি পরিশোধনের ব্যবস্থা করবে না, বরং এটি হবে আমাদের আগামী দিনের টেকসই উন্নয়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সদস্য এর সুফল ভোগ করবেন মর্মে আশা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের গ্যারেজ সংলগ্ন একটি ১৮ এইচপি ক্ষমতা সম্পন্ন গভীর নলকূপ রয়েছে। উক্ত গভীর নলকূপ থেকে যে পানি উত্তোলন করা হতো সে পানিতে আয়রন মিশ্রিত থাকার কারণে এ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা আয়রন রিমুভাল প্লান্টটি স্থাপন করা হয়েছে। যার ফলে গভীর নলকূপ থেকে উত্তোলন করা পানি আয়রন রিমুভাল প্লান্টে স্থাপিত ‘র’ ওয়াটার ট্যাংকে জমা হবে। এরপর স্থাপিত পাম্প হাউজের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আয়রন রিমুভ করে ট্রিটেড ওয়াটার ট্যাংকের মাধ্যমে ফিল্টারিং হয়ে ‘পিউর ওয়াটার’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল পানির লাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন জায়গায় পানি সরবরাহ করা হবে।
এর ফলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিনের পানির সংকট অনেকাংশে কমে আসবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যাবে। এ.কে. খান গ্রুপের সহযোগী ‘ফ্লো ওয়াটার’ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উক্ত আয়রন রিমুভাল প্লান্টের কাজটি সম্পন্ন করে।
Discussion about this post