শিক্ষার আলো ডেস্ক
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির সিএসই, আইন, অর্থনীতি ও ইইই বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আজ (বুধবার ২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারী লেইনস্থ ভবন সংলগ্ন প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন ‘হিম উৎসব ও কাওয়ালী সন্ধ্যা ২.০’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শীতের আমেজে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, সাংস্কৃতিক চর্চা ও পারস্পরিক সৌহার্দ্যকে আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যেই এ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের মাননীয় চেয়ারম্যান ডা. শাহাদাত হোসেন। সভাপতিত্ব করেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির।
উদ্বোধক ও প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমাদের ছয় ঋতুর মধ্যে গ্রীষ্মের পরে আসে বর্ষা। বর্ষা ঋতু এখন এত লম্বা যে, শরৎ ও হেমন্ত উধাও হয়ে গেছে। এটা হয়েছে জয়বায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে। আমি এই নেতিবাচক প্রভাব বলতে বুঝাতে চাচ্ছি, পাহাড় কেটে ফেলা হচ্ছে, খাল-জলাশয়-ডোবা-দিঘি ভরাট করা হচ্ছে, ভূমিকম্প হচ্ছে ইত্যাদি। এসবের বিরুদ্ধে সরব হতে হবে। এগুলো নিয়ে চিন্তা না করলে, সমাধান বের করতে না পারলে পরবর্তী প্রজন্মকে একটা বাসযোগ্য শহর উপহার দিতে পারবো না। চট্টগ্রামকে ক্লিন-গ্রীন-হেলদি সিটিতে পরিণত করতে আমি সবার সহযোগিতা চাই, চাই প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাও। তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে। আমার আবেদন, খাল-নালা পরিষ্কার রাখুন, শহরটাকে সুন্দর-পরিষ্কার রাখুন ও নিজের করে ভাবুন।
মাননীয় মেয়র তাঁর বক্তব্যে সম্প্রতি শহীদ হওয়া জুলাই আন্দোলনের বিপ্লবী শরীফ ওসমান হাদীকে গভীরভাবে স্মরণ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ধারাবাহিক উন্নয়নে মাননীয় মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন-এর বিভিন্ন ভূমিকা ও অবদানের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, অচিরেই মাননীয় মেয়র প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে আরও কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবেন, যার মধ্যে একটি হলো, খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রম অপরিহার্য। এ ধরনের উৎসব শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রশান্তি দেয়, দলগত কাজের অভ্যাস গড়ে তোলে এবং নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখে। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি সবসময় শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল উদ্যোগকে উৎসাহিত করে। আজকের এই আয়োজন প্রমাণ করে, আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু একাডেমিক ক্ষেত্রেই নয়, সাংস্কৃতিক আয়োজনেও দক্ষ ও সচেতন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির প্রকৌশল অনুষদের সহযোগী ডিন প্রফেসর ড. সাহীদ মো. আসিফ ইকবাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জনাব মোহাম্মদ ইফতেখার মনির, প্রক্টর জনাব মোহাম্মদ সোলাইমান চৌধুরী, ইইই বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব টুটন চন্দ্র মল্লিক ও আইন বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব অনুপ কুমার বিশ্বাস ।
বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. সাহীদ মো. আসিফ ইকবাল বিভিন্ন ঋতুর বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে বলেন, গ্রামে শীতকালে নানাধরনের খেলা হতো, যেমন, কাবাডি, দড়িখেলা ইত্যাদি। তখন আমাদের মা-বাবারা অনেক পিঠাপুলিও বানাতেন। আমরা এগুলো মিস করি। এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা আমাদের সেই সংস্কৃতিকে স্মরণ করি।
রেজিস্ট্রার জনাব মোহাম্মদ ইফতেখার মনির বলেন, এই অনুষ্ঠান ২০২৪-এর জুলাই আন্দোলনের প্রেরণা থেকে হচ্ছে। আমরা এই উৎসবে জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের স্মরণ করছি, স্মরণ করছি ৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদেরও। বিশেষভাবে স্মরণ করছি, সম্প্রতি শহীদ হওয়া বিপ্লবী ওসমান হাদীকে। তিনি সম্প্রতি প্রয়াত হওয়া সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ মিনহাজ হোসাইনকেও স্মরণ করেন।
প্রক্টর জনাব মোহাম্মদ সোলাইমান চৌধুরী বলেন, সুশৃঙ্খল ও আনন্দমুখর পরিবেশে এমন অনুষ্ঠান আয়োজন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির সাংগঠনিক সক্ষমতার পরিচয় বহন করে।
ইইই বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব টুটন চন্দ্র মল্লিক বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও দলগত দক্ষতা গড়ে তুলতে সাংস্কৃতিক আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আয়োজন তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
আইন বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব অনুপ কুমার বিশ্বাস বলেন, কো-কারিকুলার, এক্সট্রা কারিকুলার, একাডেমিক ও নন একাডেমিক কার্যক্রমে আমাদের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা রয়েছে। আজকের উৎসব তার উত্তম দৃষ্টান্ত।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় শীতকালীন ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলি নিয়ে ছিল নানা স্টল ও ফুডকর্নার। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় বিনোদনমূলক আয়োজন ও কাওয়ালী সন্ধ্যা অনুষ্ঠানটিকে করে তোলে আরও প্রাণবন্ত ও উপভোগ্য।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফজল আল মাহমুদ অয়ন ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী পুষ্পিতা বৈদ্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন অনুষদের সহকারী ডিন জনাব তানজিনা আলম চৌধুরী, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী ডিন জনাব ফারজানা ইয়াসমিন চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগের কো-অর্ডিনেটর জনাব বদরুল হাসান আউয়াল, সিএসই বিভাগের প্রশাসনিক কো-অর্ডিনেটর কিংশুক ধর, এমএসসি কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ হাসান, একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর রেজাউর রহমান, কো-কারিকুলাম কো-অর্ডিনেটর এমডি হাসান, সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যবৃন্দ।















Discussion about this post