শিক্ষার আলো ডেস্ক
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে স্থগিত করা হয়েছে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে ২০১৯ সালে জারি করা প্রজ্ঞাপন।
আর ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ওই প্রজ্ঞাপনকে কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার এ বিষয়ে এক রিটের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মোহাম্মদ খসরুজ্জামান ও কেএম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বুয়েটের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বীর পক্ষে রিট করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। রিটে শিক্ষা সচিব ও বুয়েটের উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। তিনি জানান, বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৭, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের নোটিশ দেওয়ার কোনো ভিত্তি নেই। সমাবেশ, রাজনৈতিক দল করার এবং বাক স্বাধীনতার অধিকার মৌলিক অধিকার হিসেবে দেওয়া আছে। বুয়েট অর্ডিন্যান্স, ১৯৬১ অনুসারে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের কথা বলা আছে। নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা নেই। তারপরেও ওই নোটিশকে সম্মান করে আসছিলো ছাত্রলীগ। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফূল দিতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। এরপর রাজনীতি নিষিদ্ধের নোটিশ যখন আমাকে দেখালো আমি বললাম, এটা মৌলিক অধিকার ও বুয়েট অর্ডিন্যান্স পরিপন্থী। গতকাল রিট প্রস্তুত করে আজকে ফাইল করে শুনানি করেছি। আদালত রুল জারি করে বিজ্ঞপ্তিটা স্টে করেছেন। যার ফলে বুয়েটে রাজনৈতিক কার্যক্রমে আর কোনো বাধা থাকলো না।
আরও পড়ুনঃ উত্তাল বুয়েট , পরিবর্তিত ৬ দফা দাবী , আল্টিমেটাম !
ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ নামে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তখন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। বুয়েটের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে নিষিদ্ধ করা হলো। ’
এরপর থেকে বুয়েটে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে।
তবে গত বৃহস্পতিবার গভীররাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকেই বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম এ সমাগম ঘটান বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।
তবে রোববার বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে ছাত্রলীগ।সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বুয়েটের এই সিদ্ধান্ত মৌলিক অধিকার পরিপন্থী, সংবিধান পরিপন্থী, শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্ত।
‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি থাকতে বাধা নেই’ হাইকোর্টের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেছেন, হাইকোর্ট যা বলবে তা আমাদের মানতে হবে। কোর্টের আদেশ শিরোধার্য।
Discussion about this post