শিক্ষার আলো ডেস্ক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বা জাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলে জয় লাভ করলেন সহসভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ প্যানেলের প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু। আর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মাজহারুল ইসলামসহ বেশিরভাগ শীর্ষ পদে জয় পেয়েছে শিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’।
আজ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিনেট ভবনে জাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান।
জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি (ভিপি) হয়েছেন আব্দুর রশিদ জিতুর নাম। ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল থেকে ৩৯৩০ ভোট পেয়েছেন সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হয়েছেন মাজহারুল ইসলাম। এ ছাড়াও ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল থেকে এজিএস (পুরুষ) হিসেবে ২৩৫৮ ভোট পেয়ে ফেরদৌস আল হাসান ও এজিএস (নারী) ৩৪০২ ভোট পেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা নির্বাচিত হয়েছেন।
তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের মোট পদ ২৫টি। সম্পাদকীয় পদ ১৮টির মধ্যে ১৫টিতে এবং কার্যকরী ৬ পদের ৫টিসহ মোট ২০টিতে জয় পেয়েছে শিবির সমর্থিত প্যানেল ‘সমন্বিত শিক্ষা জোট’
জাকসুতে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৮৯৭। এর মধ্যে ছাত্র ছয় হাজার ১১৫ এবং ছাত্রী পাঁচ হাজার ৭২৮ জন। এর প্রায় ৬৭-৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।
বাকি পদগুলোের মধ্যে শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে ২৪২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আবু উবায়দা উসামা (শিবির প্যানেল), পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সম্পাদক পদে ২৮১১ সাফায়েত মীর (শিবির প্যানেল), সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ১৯০৭ ভোট পদে জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি (শিবির প্যানেল), সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মুহিবুল্লাহ শেখ জিসান (স্বতন্ত্র), সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯৮৬ ভোট পেয়ে রায়হান উদ্দিন (শিবির প্যানেল), নাট্য সম্পাদক পদে ১৯২৯ ভোট পেয়ে রুহুল ইসলাম (শিবির প্যানেল), ক্রীড়া সম্পাদক পদে ৫৭৭৮ ভোটে পেয়েছে মাহমুদুল হাসান কিরণ (স্বতন্ত্র), সহ-ক্রীড়া (ছেলে) পদে ২১০৫ ভোট পেয়ে মহাদী হাসান (শিবির প্যানেল), সহ-ক্রীড়া (মেয়ে) পদে ১৯৭৬ ভোট পেয়ে ফারহানা আক্তার লুবনা (শিবির প্যানেল), আইটি ও গ্রন্থাগার পদে ২৪২৬ ভোট পেয়ে রাশেদুল ইমন লিখন (শিবির প্যানেল), সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন পদে আহসান লাবিব (বাগছাস), সহ-সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন (ছেলে) পদে তৌহিদ ইসলাম (শিবির প্যানেল), সহ সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন (মেয়ে) পদে নিগার সুলতানা (শিবির প্যানেল), ২৬৫৩ ভোট পেয়ে স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পাদক পদে হুসনে মোবারক (শিবির প্যানেল), পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক পদে তানভীর রহমান (শিবির প্যানেল) নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়াও কার্যকরী সদস্য (নারী) পদে নির্বাচিত হয়েছেন ফাবলিহা জাহান (শিবির প্যানেল), নাবিলা বিনতে হারুন (শিবির প্যানেল), নুসরাত জাহান লিমা (শিবির প্যানেল); কার্যকরী সদস্য (পুরুষ) পদে ১৭৪৬ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন আবু তালহা (শিবির প্যানেল), তরিকুল ইসলাম (শিবির প্যানেল) ও মোহাম্মদ আলী চিশতি (বাগছাস)।
এবারের জাকসু নির্বাচনে ১১ হাজার ৭৫৯ জন ভোটারের মধ্যে প্রায় ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ভোট দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ১৭৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৮ জন এবং যুগ্ম সম্পাদক (এজিএস) পদে ১৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। নারী প্রার্থীর সংখ্যা ৬। নির্বাচনে অংশ নিয়েছে মোট আটটি পূর্ণ ও আংশিক প্যানেল।
তবে ভোট গ্রহণ শুরুর পর কারচুপির অভিযোগ তুলে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলসহ পাঁচটি প্যানেল নির্বাচন বর্জন করে। বর্জনকারীদের মধ্যে রয়েছে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের সম্প্রীতির ঐক্য, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্টের ‘সংশপ্তক পর্ষদ’, এবং স্বতন্ত্রদের ‘অঙ্গীকার পরিষদ’।
Discussion about this post