শিক্ষার আলো ডেস্ক
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সাধারণ বোর্ডে ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৪২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬ লাখেরও কম পাস করেছেন। আর মাদরাসা বোর্ডে ৮২ হাজার ৮০৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬২ হাজার ৬০৯ জন পাস করেছেন। শুধু এবার নয়, গত ৫ বছরে কখনোই মাদরাসা বোর্ডের পাসের হার ৯০ শতাংশের নিচে নামেনি।
একই দেশের একই বয়সের শিক্ষার্থীদের ফলাফলে কেন এমন ভিন্নতা? তাছাড়া বাধ্যতামূলক সাধারণ বিষয় ছাড়াও কোরান-হাসিদসহ বাড়তি কয়েকটি বিষয় পড়তে হয় আলিম পরীক্ষার্থীদের। সাধারণ শিক্ষার্থীরা কিভাবে দেখেন বিষয়টিকে?
সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই। সেখানে ভালো করে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়।
তবে এ নিয়ে ভিন্নমতও রয়েছে। শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ জানান, মাদরাসার প্রশ্ন বই থেকে সরাসরি হয়। তবে এইচএসসির প্রশ্ন ঘুড়িয়ে করা হয়। এছাড়া, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের কো কারিক্যুলাম এক্টিভিটি না করাকেও কারণ হিসেবে দেখছেন তারা।
তবে দুই বোর্ডের প্রশ্ন ও উত্তরপত্র তুলনামূলক বিশ্লেষণের সুযোগ না হলেও মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং শিক্ষা গবেষকের সঙ্গে যমুনা টেলিভিশনের কথা হয়। তাদের ব্যাখ্যায় অবশ্য ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিঞা মো. নূরুল হক বলেন, আন্ত: শিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটি প্রশ্নপত্রের ধরণ নিয়ে নিয়ম বেধে দেয়। একই কাঠামোতে দুই বোর্ডের প্রশ্ন হয়। তাই সেখানে প্রশ্নের মান কমানোর সুযোগ নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেছেন, প্রশ্নের ধরণ বদলে দিলে রেজাল্ট বদলে যাবে। এখানে মাদরাসায় বরাবরই ভিন্নতা অবলম্বন করে। ফলে তাদের রেজাল্ট একটি স্ট্যান্ডার্ড জায়গায় থাকে।
আরও পড়ুনঃমাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৫ %
তিনি আরও বলেন, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ভালো করার অন্যতম আরও একটি কারণ রয়েছে। সেখানে শিক্ষকরা শুধু বেতনের জন্য পড়ান না। তারা ধর্মের জন্য কাজ করছেন এমন একটা মোটিভেশন কাজ করে। এ সময় রাষ্ট্র যোগ্যদের শিক্ষকতা পেশায় আনতে পেরেছে কি না এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি।
এদিকে, ১৭ বছর ঢাকা কলেজে শিক্ষকতা শেষে সরকারি মাদরাসা-ই আলিয়ার প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক ওবায়দুল হক। খুব কাছ থেকে দুই ধারার শিক্ষা ব্যবস্থাকে দেখা এই অধ্যাপক শিক্ষার্থীদের একাগ্রতাকেই এগিয়ে রেখেছেন।
ওবায়দুল হক বলেছেন, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে না পাওয়ার বেদনা থাকে। তাদের বাঁকা চোখে দেখা হয়। সেই জেদ থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝেই ভালো করার ইচ্ছে কাজ করে। তাই তারা পড়াশোনায় বেশি মনোযোগী হয়।
মাদ্রাসা বোর্ডের তুলনায় সাধারণ বোর্ডে শিক্ষার্থী অনেক অনেক বেশি। তাই ফলাফলের অনুপাত দিয়ে সঠিক বার্তা পাওয়া কঠিন বলে জানান শিক্ষা গবেষকরা। তারা বলছেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় গলদ দীর্ঘদিনের। সেখান থেকে বের হতে হবে।
প্রসঙ্গত, এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় আলাদা নম্বর যোগ করে। যা মেধা তালিকার ক্রম নির্ধারণে সহায়ক হয়। সৌজন্যে- যমুনা টিভি














Discussion about this post