খায়রুল ইসলাম বাশার
বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পেশাদারিত্বের সাথে তারযুক্ত (Wired) ও তারহীন (Wireless) লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN) অবকাঠামো সেবা দেয়ার জন্য গার্টনার®ম্যাজিক কোয়াড্রান্ট™ -এর ২০২৫ সালের প্রতিবেদনে ‘লিডার’ গ্রুপে জায়গা করে নিয়েছে হুয়াওয়ে।
টানা তিন বছর ধরে হুয়াওয়ে এই অবস্থান ধরে রেখেছে হুয়াওয়ে। আর এবছর উত্তর আমেরিকার বাইরের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই জায়গা পেয়েছে এই প্রতিষ্ঠান।
একটি নিজস্ব মানসম্মত পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রযুক্তি খাতের সরবরাহকারীদের মূল্যায়ন করে গার্টনার®ম্যাজিক কোয়াড্রান্ট™ । এই মূল্যায়ন প্রধানত দুইটি অক্ষের ওপর ভিত্তি করে হয়: একটি হলো পরিপক্ক দূরদৃষ্টি এবং আরেকটি হলো কাজ পরিসমাপ্তি ক্ষমতা। এখানে খাত বিষয়ক জ্ঞান, উদ্ভাবন, পণ্য ও সেবার গুণগত মান ও মূল্য, গ্রাহক অভিজ্ঞতা, বিক্রয় প্রক্রিয়া এমন অনেক বিষয় বিবেচনা করা হয়। তাই এই স্বীকৃতি উদ্ভাবন ও গ্রাহক-কেন্দ্রিক নেটওয়ার্ক সমাধানের প্রতি দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি এর উন্নত পণ্য, বিশ্বব্যাপী পরিষেবা সহায়তা ও দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের বিষয়স্বরূপ।
বর্তমান যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংযোগ ব্যবস্থাকে বদলে দিচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে হুয়াওয়ে ওয়্যারলেস সংযোগ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অ্যাপ্লিকেশন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভিজ্ঞতা উন্নত করার লক্ষ্যে ক্যাম্পাস নেটওয়ার্কে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত করছে। এই অগ্রগতি ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিয়ে ১০ জিবিপিএসের ওয়্যারর্ড
এবং ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। এটি স্মার্ট ক্যাম্পাস, মোবাইলভিত্তিক আর্থিকসেবা ও ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে সহযোগিতা করবে।
আরও পড়ুন-শব্দ বিশ্লেষণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে স্পর্শ শনাক্ত করছে রোবট
হুয়াওয়ে ২০২৫ সালে এই খাতে প্রথম ফাইভ-রেডিও ওয়াই-ফাই ৭ অ্যাক্সেস পয়েন্ট (এপি) নিয়ে আসে। এটি ইন্টেলিজেন্ট ডিজিটাল প্রি-ডিস্টরশন (ডিপিডি) এবং ইন্টেলিজেন্ট কোঅর্ডিনেটেড শিডিউলিং অ্যান্ড স্পেশিয়াল রিইউজ (আইসিএসএসআর)-এর মতো প্রযুক্তিগুলিকে একীভূত করে ওয়াই-ফাই ৭-এ ওয়াই-ফাই ৮-এর উদ্ভাবন যুক্ত করেছে। এর ফলে আরও উন্নত ওয়্যারলেস সেবা পাওয়া যাচ্ছে। ওয়াই-ফাই, আইওটি এবং সেন্সিং প্রযুক্তিকে একসাথে কাজে লাগিয়ে হুয়াওয়ে ব্লাইন্ড-স্পট মুক্ত সংযোগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই সেবার সার্বিক খরচ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে এনেছে।
ওয়াই-ফাই শিল্ড প্রযুক্তিকেও আরও শক্তিশালী করেছে হুয়াওয়ে। এটি বর্তমানে ১৩টি এপি মডেলে কাজ করে। এগুলি আবাসস্থল ও বাইরের স্থান থেকে শুরু করে আইওটি ও বহুসংখ্যক ডিভাইস রয়েছে এমন জায়গাতে ব্যবহারযোগ্য। এর সিকিওর টার্মিনাল অ্যাক্সেস, ফাইন-গ্রেইনড পলিসি কনট্রোল ও ওয়াই-ফাই চ্যানেল স্টেট ইনফরমেশন (সিএসআই) সেন্সিংয়ের মতো ফিচারগুলি সুরক্ষা নিশ্চিত।
অডিও/ভিডিও, ক্লাউড ডেস্কটপ ও অফিসে দলবদ্ধ কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য হুয়াওয়ে ব্যবহার করছে বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন প্রযুক্তি, যেমন- আইস্যাক (iSAC), আইশিডিউলার (iScheduler) এবং আইফ্লো (iFlow)। এর পাশাপাশি ভিআইপি ফাস্টপাস এবং পার-প্যাকেট পাওয়ার কন্ট্রোল প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ সেবায় সর্বোচ্চ মানের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ম্যাপ ও নেটমাস্টার এআই এজেন্ট যুক্ত ’ওয়ান ম্যাপ, ওয়ান ব্রেইন’ আর্কিটেকচারের মাধ্যমে এটি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারে। নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যভিত্তিক কাজ, সাধারণ ভাষায় নির্দেশ দেওয়ার সুবিধা এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৮০% পর্যন্ত ওয়্যারলেস সমস্যার সমাধানের সুবিধা থাকায় এটি মাত্র একজন ইঞ্জিনিয়ারকে ১০,০০০-এর বেশি ব্যবহারকারীর একটি ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক দক্ষভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে।
ভবিষ্যতেও হুয়াওয়ে গ্রাহকদের অগ্রাধিকার দিয়ে উদ্ভাবন চালিয়ে যাবে এবং এআই-চালিত ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ককে আরও উন্নত করবে। অংশীদারদের সঙ্গে একসাথে কাজ করে হুয়াওয়ে নতুন প্রজন্মের এমন ’এআই ক্যাম্পাস’ গড়ে তুলতে চায় যা নেটওয়ার্ক ব্যবহারের অভিজ্ঞতা উন্নত করবে, পরিচালনার দক্ষতা বাড়াবে এবং এআই যুগে সবার সাফল্য নিশ্চিত করবে।
Discussion about this post