অনলাইন ডেস্ক
অনেকেরই ধারনা ডিজিটাল কন্টেন্ট বুঝি এমন বিষয় যে পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা দেয়া থেকে শুরু করে ধন্যবাদ দিয়ে ক্লাস শেষ করা পর্যন্ত শিক্ষকের সকল কর্মকান্ড ক্লিক ক্লিক করে উপস্থাপন করা। আবার অনেকেই মনে করেন ভিডিও, এনিমেশন কিংবা পিকচার দেখিয়ে ক্লাস রুমকে সিনেমা হল বানানোর নামই হল ডিজিটাল কন্টেন্ট উপস্থাপন। আসলে দোষটা উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গের নয়।
ডিজিটাল কন্টেন্ট সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান স্বল্পতা কিংবা যথাযথ নিয়ম অনুসারে কন্টেন্ট না বানানো বা ভুল উপস্থাপনই এর জন্য দায়ী। একটি-দুটি স্লাইড, ছোট্ট একটি ভিডিও ক্লিপ, অডিও ক্লিপ, একটি ছবি2Dবা3Dএনিমেশন, একটি পিডিএফ ফাইল, টেক্স ফাইল, কোনো ওয়েব সাইটইত্যাদি সব কিছুই এক একটি ডিজিটাল কন্টেন্ট। শিক্ষা বিজ্ঞানের ভাষায় একটি ছবি হাজারো শব্দের চেয়েউত্তম। উদাহরণ স্বরূপ ক্লাস রুমে মাল্টিমিডিয়া বা হাতে ড্র করে অথবা পোস্টারে একজন শিক্ষক একটি জবা ফুলের বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করে দেখালেন।
এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা ছবি দেখেই বিষয়টি বুঝে নিবে। এবং শিক্ষার্থীর কাছে বিষয়টি উপভোগ্য হবে। আবার শিক্ষকের হাতে ছবি আঁকা বা পোস্টার পেপারে অঙ্কিত ছবির ক্ষেত্রে কিছ ুসীমাবদ্ধতা রয়েছে। ধরুন একজন শিক্ষাথীর্ পলাশ ফুলের চিহ্নিত চিত্র দেখতে চাইল যা শিক্ষকের কাছে তত্ক্ষনাত্ দেখানো সম্ভব নয়, কিংবা সময় সাপেক্ষ। অন্যদিকে মাল্টিমিডিয়ায় ডিজিটাল কন্টেন্ট এর মাধ্যমে কয়েক মিনিটে হাজারো ফুল বা এর বিভিন্ন অংশ দেখানো সম্ভব। এখানেই হচ্ছে ডিজিটাল কন্টেন্ট বা মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুমের জাদুকরী খেলা। মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুমে একজন শিক্ষক যে কোনো শিক্ষার্থীর সব ধরনের চাহিদা পূরণ পারে। এতে জ্ঞানপিপাসু শিক্ষার্থী পরিতৃপ্ত হয়ে বাড়ি ফিরতে পারে। আর এই পরিতৃপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠের বিষয়কে আকর্ষণীয় করে তুলতে একটি ডিজিটাল কন্টেন্ট এর তথ্য ও প্রযুক্তির যে মাধ্যম গুলো ব্যবহার করা হয় তা নিম্নে আলোচনা করা হল:
ডিজিটাল কন্টেন্ট বা শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমগুলো হল-
ভিডিও উপকরণ
অডিও উপকরণ
পিকচার/ইমেজ
ওয়েব ভিত্তিক উপকরণ
মাল্টিমিডিয়া এনিমেশন
ভিডিও উপকরণ ডিজিটাল কন্টেন্টের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট, টিভি, সিডি-ও ডিভিডি, মোবাইল, ট্যাব ইত্যাদি ব্যবহার করে আমরা আমাদের পাঠ সংশ্লিষ্ট ভিডিও ক্লিপ পেতে পারি বা সংগ্রহ করতে পারি। ইন্টারনেটের youtube, teachertube, e-how.com, discovery education ইত্যাদিতে আমাদের কন্টেন্টের জন্য প্রয়োজনীয় ভিডিও পাওয়া যায়। ক্লাস রুমে জটিল বিষয়কে সহজ ভাবে উপস্থাপনের জন্য খুবই কার্যকরী। এছাড়া বিভিন্ন লেকচার ভিত্তিক ও টিউটোরিয়ালভিত্তিক ওয়েবসাইট থেকে ভিডিও সংগ্রহ করা যায়। অনেক সময় একটি সাধারণ ক্যামেরা বা মোবাইল ফোনের ক্যামেরা ব্যবহার করে কোনো বিষয়, ঘটনা, রোল প্লে, ইত্যাদি ভিডিও করে ডিজিটাল কন্টেন্টে ব্যবহার করা যায়। ক্যামব্রিয়ান টিভি ডট কম থেকে বিভিন্ন ্নবিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের ভিডিও লেকচার ডাউন লোডকরে ডিজিটাল কন্টেন্টে ব্যবহার করা যাবে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম গুলোতেও পাঠ সংশ্লিষ্ট অনেক ভিডিও ক্লিপ পাওয়া যায়।
ডিজিটাল কন্টেন্টে অডিও খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপকরণ। প্রকৃতি, প্রাণী, বিশেষ ঘটনা, সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয় ইত্যাদির সাথে সংশ্লিষ্ট অডিও ক্লিপ ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে ডিজিটাল কন্টেন্টে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া রেকর্ডার দিয়ে গল্প, কবিতা, ছড়াকার ও সুমিষ্ট কণ্ঠ ও সুন্দর বাচনভঙ্গি রেকর্ড করে সাহিত্যের বিভিন্ন ক্লাসে ব্যবহার করা যায়। উচ্চারণ ও উপস্থাপন ক্লাসে অডিওএর কোনোবিকল্প নেই। আবৃত্তি-গান কিংবা কোনোকিছুর ধারা বর্ণনার ক্ষেত্রে আমাদের মুঠো ফোনের অডিও রেকর্ডারই যথেষ্ট। এছাড়া ইংরেজি বা অন্য ভাষার ভিডিও ক্লিপে বাংলা নেরেশন ডাবিংএর ক্ষেত্রে মুঠো ফোনে অডিও রেকর্ড করা যায়।
ডিজিটাল কন্টেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হল পিকচার বা ইমেজ। গুগল ইমেজ সার্চের মাধ্যমে GIF, PNG, JPEG ইত্যাদি ফরমেটের যেকোনো ইমেজ পাওয়া যায়। ছবি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভালো রেজুলেশনের দেশীয় প্রেক্ষাপট ও বয়স উপযোগী ছবি নির্বাচন করতে হবে। রাজনৈতিকভাবে বা কারো ব্যক্তিগত স্বার্থে আঘাত হানে অথবা কোনো জাতিস্বত্তার অসম্মান হয় এমন ছবি ডিজিটাল কন্টেন্টে ব্যবহার করা যাবে না।
ওয়েবভিত্তিক উপকরণ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীকে সরাসরি শ্রেণিকক্ষ থেকে কোনো নির্দিষ্ট ওয়েবে লিঙ্ক করে শিক্ষা দান করা যায়। শিক্ষার্থীরাও ওয়েবে নিজেরাও স্টাডি করতে পারে।
যেমন-MOOC-Massive Open Online Course থেকে শিক্ষার্থীরা অনেক বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। এছাড়াও srijonshil.com, teacher.gov.bd, englishteststore.com, slideshare.net, slideworld.com, khanacademy.com, cambriantv.com ছোটদের ছড়া গানের জন্য এবং বিষয়ভিত্তিক (পরবর্তীতে আলোচনাকরাহবে)অসংখ্য ওয়েবসাইট থেকে ওয়েবভিত্তিক পড়াশুনা করা যায়।
ইন্টারনেট থেকে বিষয়ভিত্তিক এনিমেশন ডাউনলোড করে ডিজিটাল কন্টেন্টে ব্যবহার করা যায়। এক্ষেত্রে GIF Image, Animation Factory, PowerPoint Animation, Phet Simulation ইত্যাদি মাল্টিমিডিয়া এনিমেশন ব্যবহার করে ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি করা যায়।
Discussion about this post