বেশিরভাগ করোনা রোগী এই ছয়টি লক্ষণের কথা বলছেন
করোনার আতঙ্কে কাঁপছে বিশ্ব। প্রতিদিনিই হাজার হাজার নতুন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। একজন করোনা আক্রান্ত রোগীর কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে তা জানা একজন মানুষের জন্য আবশ্যক। ঠান্ডা, জ্বর, কাশি ছাড়াও আরো বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে একজন করোনা রোগীর।
করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা কয়েকজন বলেছেন করোনার ছয়টি প্রধান লক্ষণ সম্পর্কে।
প্রথম: পুরো শরীর জুড়ে অসহনীয় ব্যাথা থাকবে। মনে হতে পারে আপনার মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা হচ্ছে, সেই সাথে চোখ জ্বালা, গলা ব্যাথা। এগুলো করোনা রোগীর প্রথম লক্ষণ।
দ্বিতীয়: কানের ভেতরে মাঝামাঝি এবং ভেতরের অংশের মাঝখানে ইউচটাচিয়ান টিউব থাকে। মাঝে মধ্যে ইউচটাচিয়ান টিউবে চাপ দিয়ে দেখতে হবে ব্যাথা আছে কিনা।
তৃতীয়: প্রচন্ড মাথা ব্যাথা থাকবে। মনে হতে পারে কেউ মাথায় সজোরে আঘাত করছে।
চতুর্থ: চোখ জ্বালা, চুলকানি থাকতে পারে। সেই সাথে শরীরে জ্বর থাকবে।
পঞ্চম: প্রচন্ড গলা ব্যাথা থাকবে। শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হবে, খাবার খাওয়ার সময়ও অনেক ব্যাথা হবে গলায়।
ষষ্ঠ: পুরো শরীরে ব্যাথা থাকবে। কেবল কান বা বুকে নয়। সেই সাথে হাত এবং পায়েও ব্যাথা থাকবে।
করোনা সন্দেহ হলে যা করবেন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
শরীরে হালকা জ্বর, খুশ খুশ করে কাশছেন—সন্দেহ হতে পারে, করোনা নয় তো? কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই করোনার কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড–১৯–এর প্রকাশ ঘটে জ্বরের মাধ্যমে। এমন অবস্থায় কী করবেন? জ্বর হলেই হাসপাতালে ছুটবেন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, না, জ্বর হলেই হাসপাতালে ছোটার দরকার নেই। কারণ এই রোগ খুবই সংক্রামক। এতে একজন থেকে অন্যজন, এমনকি হাসপাতালের অন্য রোগীরাও আক্রান্ত হতে পারেন।
তাহলে এমন অবস্থায় করণীয় কী? সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বলছে, সন্দেহভাজন রোগীকে প্রাথমিকভাবে ঘরেই থাকতে হবে।
এই রোগ নিয়ে এত আতঙ্কের কারণ হচ্ছে এখন পর্যন্ত এর কোনো টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। চিকিৎসার শরু হয় লক্ষণ দেখে। আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, এই ভাইরাস শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে ২ থেকে ১৪ দিন সময় লাগে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রথম লক্ষণ হয় জ্বর। এ ছাড়া শুকনো কাশি বা গলাব্যথা হতে পারে।
এ ছাড়া শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির অন্য রোগ, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্রোগ, কিডনির সমস্যা, ক্যানসার ইত্যাদি থাকলে অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হতে পারে।
প্রতিষেধক না থাকায় এর প্রতিরোধে সচেতন হওয়াই এখন পর্যন্ত কার্যকর উপায়। এ জন্য ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে, অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে, ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন—এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে, অসুস্থ পশুপাখির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে।
এ ছাড়া যতটা সম্ভব ঘরে থাকতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়া ও জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। আর এই মুহূর্তে বিদেশ থেকে কেউ এলে তাঁকে বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
কারও জ্বর বা সর্দি-কাশি হলে ফোনে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে হবে। এরপরও অবস্থার উন্নতি না হলে বা কারও মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিলে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নাক-মুখ ঢেকে (মাস্ক ব্যবহার) বাড়িতে অপেক্ষা করতে হবে। অবস্থা খারাপ হলে নিকটস্থ সদর হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।
প্রয়োজনে আইইডিসিআর এর করোনা কন্ট্রোল রুম (০১৭০০৭০৫৭৩৭) অথবা হটলাইন নম্বরে (০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৪৪৩৩৩২২২, ০১৫৫০০৬৪৯০১–০৫) যোগাযোগ করা যাবে। এ ছাড়া করোনাসংক্রান্ত তথ্য জানতে বা সহযোগিতা পেতে স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ এবং ৩৩৩ নম্বরে ফোন করা যাবে।
কেন মানুষ মুখে হাত দেয়, এড়াবেন কীভাবে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে এত এত সাবধানবাণী ও সতর্কবার্তা প্রচারের পরও কেন অনেকেই তা মানছে না। চোখে, মুখে ও নাকে হাত দিলে করোনাভাইরাস সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। বাসায় বা রাস্তায় যেখানেই থাকবেন বা যাবেন, এসব পরামর্শ যে বেশির ভাগ মানুষ মানছে না দেখা যাবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা শুধু বাংলাদেশের বা কোনো নির্দিষ্ট দেশের মানুষের স্বভাব তা না। মানুষের মৌলিক যে কটি আচরণ আছে, তার মধ্যে কিছুক্ষণ পরপর মুখে হাত দেওয়া অন্যতম। কারণ, মানুষ ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় কিছুক্ষণ পরপর মুখে চোখে হাত দেয়। অতি প্রাচীনকাল থেকে মানুষ ও অন্য বড় প্রাণীরাও পোকামাকড় থেকে রক্ষা পেতে মুখে হাত দেওয়া শুরু করে। এমনকি বিষণ্ন হলে, রাগ করলে, বিস্ময় প্রকাশ করার সময় মানুষ মুখে হাত দেয়।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মেরি লাউস ম্যাকলিউস ২০১২ সালে মানুষের মুখে হাত দেওয়া নিয়ে একটি গবেষণা করে। তাতে দেখা যায় মানুষ গড়ে ২৩ বার মুখে হাত দেয়। আরেক দল গবেষক যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন শহরের একটি সাবওয়েতে সাধারণ মানুষের আচরণ পর্যবেক্ষণ করে। তাদের অজান্তে করা ওই পর্যবেক্ষণে দেখা গেল, একেকজন মানুষ গড়ে তিনবারের বেশি মুখে হাত দিচ্ছে।
কিন্তু করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার এই সময়ে তো এসব পরামর্শ মানতে হবে। তাই গবেষক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা চোখেমুখে হাত দেওয়া বন্ধে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। শুধু করোনাভাইরাসই নয়, অন্যান্য ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াও মুখে হাত দেওয়ার মধ্য দিয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে এই জরুরি পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার জন্য ও নিজের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য মুখে-নাকে ও চোখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে প্রথম পরামর্শ হিসেবে বসে বা শুয়ে থাকার সময় দুই হাতের আঙুল মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা। মুষ্টিবদ্ধ থাকা অবস্থাতেই কথা বলা বা হাঁটা-চলার চেষ্টা করা। এ ধরনের অবস্থায় অনেক সময় হাতের মুষ্টি ছুটে যেতে পারে। ফলে কিছুক্ষণ পরপর দুই হাত নাড়ানো। দুই হাত ছেড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ পর আবারও মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা।
দ্বিতীয় পরামর্শ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা চোখে চশমা দেওয়ার কথা বলছেন। এতে চোখে আঙুল চলে গেলেও বাধা আসবে। সারা দিন চোখে চশমা পড়ার অভ্যাস করলে চোখে হাত দেওয়ার অভ্যাস ধারাবাহিকভাবে কমে আসবে। তৃতীয় পরামর্শ হিসেবে মুখে মাস্ক ব্যবহার করার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে হাতে থেকে ভাইরাস মুখের মধ্যে
Discussion about this post